ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে দুই উপজেলায় আবাদ করা আমন ধানের জমি পানিতে ডুবে আছে। সাত দিনের বেশি সময় পানির নিচে থাকলে আবাদ করা আমন ধান গাছ ক্ষতির মুখে পড়বে।
ময়মনসিংহ কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে হালুয়াঘাট উপজেলায় সাত হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। অপরদিকে ধোবাউড়ায় আমন ধানের আবাদ হয়েছে সাত হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই এই দুই উপজেলার পুরোটাই বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। ফলে ওই দিন থেকেই দুই উপজেলার আবাদ করা আমন পানির নিচে রয়েছে।
হালুয়াঘাটের ঘোষগাঁও গ্রামের কৃষক আলী হোসেন জানান, সুদে টাকা ধার করে চলতি মৌসুমে দুই একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ ভারী বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে বন্যা হয়ে ধান পানির নিচে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। গত তিন দিন ধরে পানির নিচে আছে। সাত দিনের বেশি সময় পানির নিচে থাকলে ধান গাছ ক্ষতির মুখে পড়বে। ধান ঘরে ওঠাতে না পারলে সুদে নেওয়া টাকা কীভাবে ফেরত দেবেন- এই নিয়ে চিন্তিত আলী হোসেন।
তিনি আরও জানান, তার মতো অনেক কৃষকই সুদে টাকা নিয়ে আমনের আবাদ করেছেন। প্রত্যেকের জমি এখন পানির নিচে। এভাবে হঠাৎ বন্যা হবে এমন ধারণা তাদের ছিল না। এ জন্য কোনও প্রস্তুতিও ছিল না।
হালুয়াঘাটৈর নড়াইল গ্রামের কৃষক সালাম মিয়া জানান, উপজেলাজুড়ে বন্যায় আমন ধান সম্পূর্ণ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বেশি সময় ধরে পানির নিচে ধান গাছ তলিয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমন ধান ঘরে তুলতে না পারলে কৃষক খাদ্য সংকটে পড়বে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক নাসরিন আক্তার বানু জানান, হঠাৎ বন্যায় দুই উপজেলার ফসলি জমি পানির নিচে নিমজ্জিত। বেশি দিন পানির নিচে থাকলে আমন ধান গাছ পচে ক্ষতির মুখে পড়বে। কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। কৃষককে প্রণোদনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে।