করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে লকডাউন ঘোষণার পর দেশব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে চলছে স্থবিরতা। দেশের অপরাপর জেলার মতো শেরপুরের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও সংকুচিত হয়ে পড়েছে। পুঁজি হারাতে বসেছেন শত শত ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ী। এমতাবস্থায় আশার আলো নিয়ে জমে উঠেছে অনলাইন ব্যবসা। ‘আওয়ার শেরপুর’, ‘বাজার-সদাই ও ‘ইফতার বাজার’ নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের বাসায় পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে।
জানা গছে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এমতাবস্থায় দোকানপাট, কলকারখানাসহ সবকিছু বন্ধ হলেও থেমে নেই তরুণ উদ্যোক্তারা। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে করে কিছু তরুণ উদ্যোক্তা শেরপুরে চালু করেছেন ই-কমার্স ব্যবসা। অনলাইনে যোগাযোগের পর ক্রেতাদের বাসায় বাজার সদাই, ইফতারসহ নিত্যপণ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জেলার মধ্যে নিজেরা এবং জেলার বাইরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হচ্ছে পণ্য।
শেরপুরের ব্র্যান্ড খ্যাত তুলশীমালা চাল নিয়ে অনলাইনে কাজ করেন ‘আওয়ার শেরপুর’ স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, 'লকডাউনের শুরুতে কুরিয়ার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের ডেলিভারিও বন্ধ হয়ে যায়। ১৬ এপ্রিল কুরিয়ার চালু হওয়ায় পুরোদমে অর্ডার ও ডেলিভারি চালু হয়েছে। পণ্য বিক্রির টাকা দিয়ে নিজেদের পরিবার ও কর্মীদের পরিবার চলছে ভালোভাবেই।'
তিনি বলেন, 'করোনায় সবকিছু বন্ধ হলেও জীবনযাত্রা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহারের বিকল্প নেই। ইন্টারনেট নির্ভর হতে পারলে ব্যবসা, শিক্ষা, চাকরিসহ সবকিছুতে খরচ ও ভোগান্তি কমে আসবে।'
এদিকে ‘বাজার-সদাই’ নামের অনলাইন ব্যবসার অন্যতম উদ্যোক্তা জুবাইদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা করোনা সংকটের কারণে মানুষকে ঘরে রাখতে মাছ-মাংস, চাল-ডাল থেকে সব ধরনের বাজার-সদাই খুচরা বাজার দরেই ঘরে পৌঁছে দিই। আমরা এখানে লাভের হিসাবটা খুব একটা বিবেচনা করছি না। আমাদের চিন্তা হলো, ভালো সার্ভিস ও ভালো মানের পণ্য পৌঁছে দেওয়া। পরে করোনা সংকট কেটে গেলে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে পাবো। আপাতত লাভের চেয়ে মানুষের সেবার দিকটাই দেখছি। তারপরও যা লাভ হচ্ছে তাতে আমরা সবাই সন্তুষ্ট।'
অন্যদিকে ‘ইফতার বাজার’ এর অন্যতম উদ্যোক্তা ইমরান হাসান রাব্বী বলেন, ‘আমরা মূলত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মানুষকে ঘরে রাখার উদ্দেশ্যে ইফতার বাজার কর্যক্রম শুরু করি। এখান থেকে প্রতিদিন যা লাভ হয়, তা নিজেদের পকেটে না রেখে অসহায় মানুষের ইফতার করাই।’