গ্লোবাল অ্যাগ্রোভেট কোম্পানির জিপিআই ব্যবহারে এক চাষির সাড়ে চার বিঘা জমির লিচু ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা অসময়ে (হার্ভেস্টের আগ দিয়ে) পিজিআর ব্যবহারের কারণে লিচু ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে বললেও কোম্পানির মার্কেটিং কর্মকর্তা বলছেন, অন্য কোনও কারণে হতে পারে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন গ্লোবাল অ্যাগ্রোভেট লিমিটেড কোম্পানির কাছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের মুক্তদহ গ্রামের তুহিন মন্ডলের কাছ থেকে সাড়ে চার বিঘা লিচু বাগানসহ কিনে নেন পৌরসভাধীন ইছাপুর এলাকার শিহাব উদ্দিন। তিনি হার্ভেস্ট করে খুচরা বিক্রি করেন প্রতি মৌসুমে। বাগান কেনার পর চৌগাছা বাজারের বরকত স্টোর থেকে গ্লোবাল অ্যাগ্রোভেট লিমিটেড কোম্পানির পিজিআর কিনে লিচুতে প্রয়োগ করেন। যাতে লিচু আরেকটু ভালো হয়।
শিহাব উদ্দিন জানান, পিজিআর কেনার পর সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে লিচুতে স্প্রে করেন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে তিনি দেখতে পান লিচু ঝরে যাচ্ছে। পরে তিনি কোম্পানির প্রতিনিধি, দোকানি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দফতরে শরণাপন্ন হন।
বিকাল ৫টার দিকে উপজেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল লিচু বাগান পরিদর্শন করেন। ওই সময় কোম্পানির প্রতিনিধি ও যে দোকান থেকে ওষুধটি কিনেছিলেন তারাও উপস্থিত ছিলেন।
কোম্পানি প্রতিনিধি বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে লিচু ঝরে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে একমত হতে পারেননি কৃষি কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অসময়ে ওষুধ ব্যবহারের কারণে লিচু ছত্রাকে আক্রান্ত হয়েছে। পরে ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেন তারা।
শিহাব উদ্দিন বলেন, এ সময় যে পিজিআর ব্যবহার করা যায় না, এটা দোকানি বলেননি। এটি ব্যবহারে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে চৌগাছার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিজানুর রহমান বলেন, পিজিআর লিচুর বাড়ন্ত সময়ে অর্থাৎ মিষ্টতা আসার আগে গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হয়। তাতে লিচু ভালো হয়। অথচ কৃষক প্রয়োগ করেছেন হার্ভেস্টের এক সপ্তাহ আগে এবং স্প্রে করেছেন লিচুতে। এ জন্য বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ফলের চামড়াগুলো দুর্বল হয়ে গেছে। এ কারণে লিচু ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, যেগুলো আক্রান্ত হয়েছে, সেগুলোর কিছু করার নেই। তবে যেগুলো এখনও আক্রান্ত হয়নি সেগুলোয় ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গ্লোবাল অ্যাগ্রোভেট লিমিটেড কোম্পানির কোটচাঁদপুর এরিয়ার সিনিয়র মার্কেটিং কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, এটি ব্যবহারের জন্যই ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে কি না সেটা অন্য ক্ষেতে প্রয়োগ করে দেখা হবে।
তিনি বলেন, হয়তো অন্য কোনও ওষুধও এর সঙ্গে প্রয়োগ করা হয়েছে। যার ফলে ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে। এই ওষুধ ফল পাকার মুখেও ব্যবহার করা যায়। স্প্রে করলেও কোনও অসুবিধা হয় না।