ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে রবিবার (০২ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নলডাঙ্গা ভূষণ রোডের মধুগঞ্জ বাজারে এ মানববন্ধন করা হয়।
কালীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ উদ্দীনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ঠান্ডু। তিনি বলেন, ‘এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার প্রমাণ চাই। তার পাসপোর্ট, ব্যবহৃত জামা-কাপড়, হাতঘড়ি ও চশমাসহ হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র আলমত হিসেবে আমাদের দেখাতে হবে। যদি হত্যার শিকার হন তাহলে তার খণ্ডিত দেহ হলেও আমরা দেখতে চাই। আর যদি নিখোঁজ হন, তাহলে সন্ধান চাই।’
মানববন্ধনে উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী বলেন, ‘এমপির মৃত্যুর খবরে কালীগঞ্জবাসী শোকে মুহ্যমান। কালীগঞ্জের প্রতিটি উন্নয়ন এমপি আজীমের কথা বলে। তার হাত ধরে কালীগঞ্জের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি হয়েছে। উপজেলার রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, হাটবাজার সর্বত্রই তার স্পর্শ রয়েছে। এমন জনপ্রতিনিধিকে যারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হোক।’
পৌর মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ বলেন, ‘অনেকে এমপিকে নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করছেন। যা সত্য নয়। সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। কেউ কেউ ফেসবুকে এমপিকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য পোস্ট করে ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। যারা এমন করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুজ্জামান রাসেল, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান অহিদুজ্জামান ওদু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদ সমশের, এমপির ভাতিজা কালীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মনিরুজ্জামান রিংকু প্রমুখ। মানববন্ধনে এমপির হত্যারকারীদের বিচারের দাবিতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিচারের দাবি জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, আনোয়ারুল আজীম আনার ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে পর পর তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে যান। সেখানে বরাহনগর থানার মগুলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামের এক বন্ধুর বাড়িতে ওঠেন। পরদিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হলে তার আর খোঁজ মেলেনি। এরপর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ছিলেন।
গত ২৩ মে বিকালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিদর্শক (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছি, যার ভিত্তিতে মনে করছি, আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়েছে। তবে মরদেহ এখনও পাওয়া যায়নি। পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দফতরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আখতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আজীমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’