হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে যশোর। তীব্র ঠান্ডার সঙ্গে মৃদু হাওয়া বিপর্যস্ত করে তুলেছে জনজীবন। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) যশোর জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যশোরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই তাপমাত্রা নিম্নমুখী। আজ যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এ কারণে শীত জেঁকে বসেছে। প্রচণ্ড শীতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।
হারুন অর রশিদ নামে এক পথচারী বলেন, ‘গত কয়েক দিন বেশ ঠান্ডা ছিল। আজও প্রচণ্ড ঠান্ডা। তবে বাতাস বেশি না থাকায় কষ্ট কম হচ্ছে। শীতকে মাথায় রেখে স্কুলগুলো বন্ধ করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সবুজ মল্লিক নামে অপর একজন বলেন, ‘প্রচণ্ড ঠান্ডা। সকালে ব্যায়াম করেও শরীর গরম করতে পারিনি। এই ঠান্ডায় সবচেয়ে কষ্ট আছে বৃদ্ধ ও শিশুরা।’ সকালে রোদ ওঠায় তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় আছে বলে জানান তিনি।
এদিকে হাসপাতালেও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। ঠান্ডায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ভর্তি পাঁচ মাসের সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন যশোর সদর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের রহিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতের কারণে বাবুর ঠান্ডা লেগেছে। গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসক জানিয়েছেন ওর নিউমোনিয়া হয়েছে। আরও কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হবে।’
সালমা বেগম নামে অপর এক নারী জানান, ঠান্ডার কারণে তার ছেলের বুকে কফ জমে গেছে। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসক তাকে আরও কয়েক দিন হাসপাতালে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
জানতে চাইলে যশোর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অধ্যাপক আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, ‘শীতে ঠান্ডাজনিত রোগ বিশেষ করে সর্দি, কাশি, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, কোল্ড ডায়রিয়া এবং পানি কম পান করায় প্রস্রাবের সংক্রমণ জাতীয় রোগ হতে পারে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে কুসুম গরম পানি পান, গরম কাপড় পরিধান, পচা-বাসি খাবার না খাওয়া, কুয়াশায় বাইরে না বের হওয়া, বাচ্চাদের দুই-একদিন পর গোসল করানো দরকার। আর অবস্থা খারাপ হলে জরুরিভাবে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।’
এদিকে, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় আজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যশোরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হোসেন বলেন, ‘গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আজকের তাপমাত্রার তথ্য জেনেছিলাম। আজও পূর্বাভাস নেওয়া হবে। তাপমাত্রার উন্নতি না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আরও বাড়বে।’