গাজীপুরের পূবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় একাধিক শিশু-কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ইমাম রহিজ উদ্দিন (৩৫) কারাগারে মারা গেছেন। রবিবার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টার দিকে গাজীপুর জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
ইমাম রহিজ উদ্দিন কুমিল্লার মতলব উপজেলার বাদশা মিয়ার ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কাজ করতেন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম রহিজ উদ্দিনকে আটক করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাকে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠায়।
গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, ছেলেশিশু ও কিশোরদের ধর্ষণের অভিযোগে রবিবার এলাকাবাসী গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব রহিজ উদ্দিনকে আটক করে। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে গাছে বেঁধে গণপিটুনি দেয়। এ সময় এলাকাবাসী তার গলায় জুতার মালা দিয়ে মারধর করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় স্কুল-কলেজ ছাত্রদের সঙ্গে ইমাম রহিজ উদ্দিন চলাফেরা করতেন বেশি। ছেলেদের ডেকে নিয়ে তার থাকার ঘরে কম্পিউটার এবং মোবাইলে গেম খেলতে দিতেন ও বোতলজাত পানীয় পান করাতেন। ওই পানীয় পান করার পর তারা অচেতন হয়ে পড়লে রহিজ উদ্দিন তাদের ধর্ষণ করতেন। সম্প্রতি কলেজের এক ছাত্রকে রাতে ইমাম রহিজ উদ্দিন ঘুমাতে ডেকে নিয়ে যান। পরে ওই ছাত্রকে একটি কোমল পানীয় পান করতে দেন। ওই পানীয় পান করার পর কলেজছাত্রের মাথা ঘুরতে থাকে। পরে তিনি কৌশলে ঘর থেকে বের হয়ে তার পরিবারকে ফোনে বিষয়টি জানান।
বিষয়টি জানাজানি হলে রবিবার এলাকার লোকজন রহিজ উদ্দিনকে আটকের পর গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই ঘটনায় রবিবার থানায় মামলা হলে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
নির্যাতিত এক কিশোরের বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ইমাম রহিজ উদ্দিনকে এলাকাবাসীর কাছ থেকে উদ্ধার করে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রাতেই গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠায়। কারাগারে রাত ৩টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে মরদেহ ওই হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, রহিজ উদ্দিনের শরীরে পাবলিক অ্যাসল্টের চিহ্ন ছিল। রাত ৩টায় কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।