আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু ছাইদ শিকদার নিজ বাড়ির সামনে থাকা নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেছেন। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের বাড়ির নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেন তিনি।
আবু ছাইদ শিকদার পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। প্রায় ৩০ বছর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। ২০১৮ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আগেও একবার আওয়ামী লীগের সমর্থনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ভাগনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু ছাইদ শিকদার কাকডাঙ্গা গ্রামে তার বাড়ির সামনের পুকুরপাড়ে কয়েক বছর আগে ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন নৌকার প্রতিকৃতি নির্মাণ করেন। রবিবার সকালে তার লোকজন ওই প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলেন। এ সময় চেয়ারম্যান আবু ছাইদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
নৌকার প্রতিকৃতি ভাঙার সময় তিনি বলেন, ‘যার দল করি (শেখ হাসিনা), সেই গেছে পালাইয়া। আদর্শচ্যুত হইছে, সে পালায় গেছে। ওই দল আর করতে রাজি না। সে আসলেও আওয়ামী লীগ আর করবো না। তাই নৌকা ফলক ভাইঙ্গা ফালাইছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আবু ছাইদ শিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করতাম। শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান ছিলাম। যার দল করি সেই নেত্রী দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পালিয়ে গেছে। এই ক্ষোভে নৌকা ফলক ভেঙে ফেলেছি। তার দল আমি আর করবো না। এখন থেকে কোথাও আওয়ামী লীগের পরিচয় দেবো না। আওয়ামী লীগের কোনও সংগঠনে আমার নাম থাকলে সেখান থেকেও নাম সরিয়ে নেবো।’
এদিকে, নৌকার প্রতিকৃতি ভেঙে আবু ছাইদের আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া নিয়ে পুরো জেলা ও উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
তার এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী মুক্তা বলেন, ‘দীর্ঘ তিন দশক ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকা আবু সাইদ আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ভাগনে। মামার প্রভাব খাটিয়ে তিনি ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর ব্যাপক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের এই দুর্দিনে এসে ভোল পাল্টেছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডে আমরা হতবাক হয়েছি। নৌকা প্রতিকৃতি ভাঙার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’