গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রী নাদিরা আক্তারকে (২৫) কুপিয়ে হত্যার পর শ্বশুরকে ফোন করে পালিয়েছেন স্বামী। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে লাশ উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। শ্রীপুরের চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাদিরা আক্তার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের ঝিকাতলা (মাইজহাটি) গ্রামের আমিনুল ইসলামের স্ত্রী। নাদিরা মাওনা পাতারপাড় এলাকার ক্রাউন অ্যাপারেলস পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামানের বাড়িতে ছয় বছর যাবৎ ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।
আমিনুল ইসলাম একই গ্রামের ফখর উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় আনন্দবাজার এলাকার স্টিল মার্ক কারখানায় চাকরি করতেন।
নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া জানান, তিনি এবং তার বোন স্বামীকে নিয়ে একই মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সকালে তিনি কর্মস্থলে যাওয়ার সময় তার বোনের ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তালাবদ্ধ ঘর দেখে মনে করছিলেন তার বোন কর্মস্থলে চলে গেছে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার বাবা তাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে কারখানা থেকে বাসায় এসে দেখেন তার বোনের ঘর তালাবদ্ধ। পরে তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে দেখেন বোনের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে রয়েছে। দুলাভাই আপাকে হত্যা করে বাইর থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই দুলাভাই আপাকে বিভিন্ন বিষয়ে মারধর করত। আপাকে হত্যার পর সে বাবাকে ফোন করে জানায় এবং লাশ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে লাইন কেটে দেয়। আমার বোনকে বিয়ে করার আগেও সে আরেকটা বিয়ে করেছিল। প্রথম স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে সে জেল খেটেছিল। বিয়ের পর আমরা বিষয়টি জানতে পারি।’
চকপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক হাসমত উল্লাহ বলেন, ‘বাড়ির মালিকের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে পুলিশ তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে মেঝেতে নাদিরা আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে। মরদেহের পাশে রক্তমাখা দা পড়েছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদনের পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’