মাদারীপুরে আলোচিত চার খুনের ঘটনায় অন্যতম আসামি জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান খানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তার সহযোগী সায়েদ মোল্লাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শাহজাহান খান (৪৫) সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার বাসিন্দা। তিনি জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার সহযোগী সায়েদ মোল্লা (৩৫) একই এলাকার বাসিন্দা। সোমবার রাতে রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা থেকে শাহজাহান ও মঙ্গলবার সকালে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে সায়েদকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পূর্ববিরোধ ও বালু ব্যবসার জের ধরে ৮ মার্চ তিন ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। তারা হলেন আতাউর রহমান সরদার ওরফে আতাবুর (৩৫), সাইফুল ইসলাম ওরফে হিটার সাইফুল (৩০), তাদের চাচাতো ভাই পলাশ সরদার (১৭)। আতাউর ও সাইফুল সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার বাড়ি এলাকার আজিবর সরদারের ছেলে। পলাশ একই এলাকার মুজাম সরদারের ছেলে। নিহত সাইফুল খোয়াজপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন অলিল সরদার (৪০) ও তাজেল হাওলাদার (২০)। সর্বশেষ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তাজেল হাওলাদার। অলিল সরদার এখনও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
র্যাব-৮ জানায়, খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে ৮ মার্চ শাহজাহান খান ও হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তার লোকজন সাইফুলসহ তার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এক দিন পরই সাইফুল ও আতাউর সরদারের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার শুরু থেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন মূল অভিযুক্ত কৃষক দলের নেতা শাহজাহান খান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে তিনি রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থান করছেন। পরে র্যাব-৮ ও র্যাব-৩ যৌথ অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে গ্রেফতার করে। পরে পৃথক অভিযানে তার সহযোগী সায়েদ মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৮-এর মাদারীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন, ‘চার খুনের ঘটনায় অন্যতম আসামি শাহজাহান দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। তাকে ধরতে র্যাব শুরু থেকেই তৎপর ছিল। সর্বশেষ তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় শাহজাহান ও তার সহযোগী সায়েদ খানকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের হাতিরঝিল থানায় আসামিদের হস্তান্তর করা হয়।’