শরীয়তপুরে ডাকাতি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পিটুনির ঘটনায় আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ নিয়ে পিটুনির ঘটনায় তিন ব্যক্তির মৃত্যু হলো। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজনের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ।
নিহত যার পরিচয় মিলেছে তার নাম এবাদুল ব্যাপারী (৪৮)। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানারগাঁও এলাকার রহমত আলীর ছেলে। আঙুলের ছাপের (ফিঙ্গার প্রিন্ট) সাহায্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর এবাদুলের মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
শুক্রবার রাতে শরীয়তপুর সদরের ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার রোষানলে পড়ে পিটুনির শিকার হয় একদল ডাকাত। এ সময় ডাকাত দলের এলোপাতাড়ি গুলিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আট জন আহত হন।
নিহত দুই ব্যক্তির পরিচয় এখনও পায়নি পুলিশ। তাদের পরিচয় শনাক্তের জন্য হাত ও আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের অপরাধ তদন্ত বিশ্লেষণ শাখা। আহত ডাকাত দলের সদস্যদের দেওয়া তথ্যে চার জনের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। তারা হলেন- মুন্সীগঞ্জের কালিয়ারচর এলাকার রিপন (৪০), বাংলাবাজার এলাকার রাকিব গাজী (৩০), শরীয়তপুরের জাজিরার কুণ্ডেরচর এলাকার আনোয়ার দেওয়ান (৫০) ও মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার সজীব (৩০)।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, পিটুনির ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে দুজন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে একজন মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। ওই ব্যক্তি আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদীতে বাল্কহেডে করে ডাকাতি করতে আসে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল। তখন ওই এলাকার নৌযানের শ্রমিকরা ও স্থানীয় জনতা ডাকাত দলকে ধাওয়া করেন। ডাকাত দলের সদস্যরা গুলি, ককটেল, বোমা ছুড়ে স্পিডবোটে করে কীর্তিনাশা নদী দিয়ে পালাতে থাকে। স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে ডাকাত দলের সাত সদস্যকে আটক করে পিটুনি দেন। পিটুনিতে ডাকাত দলের দুই সদস্য মারা যান। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।