নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গলায় কলস বাধা অবস্থায় ওমর আলী (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে নৌপুলিশ। নিখোঁজের দুই দিন পর শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উপজেলার তারাব পৌরসভার নোয়াপাড়া এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ওই বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওমর আলী রূপগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর এলাকার মৃত ফৈজদ্দিনের ছেলে।
নিহতের ছেলে শফিকুল ইসলাম দাবি করেন, সম্পত্তিকে কেন্দ্র করেই তার বাবা ওমর আলীকে হত্যা করে গুমের উদ্দেশ্যে কলসির সঙ্গে বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
ইছাপুড়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) আমিরুল সিকদার জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় তার গলার সঙ্গে একটি পানি রাখার কলস বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে গলায় কলসি বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, নিহতের ছেলে শফিকুল ইসলাম তার বাবা ওমর আলীর লাশ শনাক্ত করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর (শুক্রবার) সকাল থেকে ওমর আলী নিখোঁজ রয়েছে জানিয়ে তার ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, নিহত ওমর আলীর আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী লিপি আক্তার উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা করতো। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় বাবা ওমর আলীর ওপরে নানা ভাবে নির্যাতন চালাতো। এসব ঘটনার মধ্যে গত প্রায় ৬ মাস আগে ছেলে রফিকুল ইসলাম মারা যায়। এরপর তার স্ত্রী লিপি আক্তারের কোনও জায়গা-জমি না থাকায় ওমর আলী নিজ বাড়িতে একটি ছাপড়া ঘরে এক মাসের জন্য লিপি আক্তারকে থাকতে দেন। এক মাস পর লিপি আক্তারকে ছাপড়া ঘর ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করে ছেলে শফিকুল ইসলাম ও তার বাবা ওমর আলী। এ নিয়ে গত ৮ সেপ্টেম্বর লিপি আক্তারসহ লিপি আক্তারের বাবার বাড়ির লোকজন মিলে ওমর আলীর আরেক ছেলে শফিকুল ইসলামকে বেধরক মারপিট করে। এ ঘটনা নিয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে শফিকুল ইসলাম। সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই লিপি আক্তারের সঙ্গে ওমর আলী ও শফিকুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছে।