ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির একদিন পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক। বুধবার দুপুরে শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন উপস্থিত না থাকায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। বুধবার আত্মসমর্পণ করে শুনানি শেষে এক হাজার টাকার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।’
মামুনুল হকের আইনজীবী ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অসুস্থ থাকায় মঙ্গলবার ধার্য তারিখে উপস্থিত হতে না পারায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানালে শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।’
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আদালত আসামি মামুনুল হককে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রতি ধার্য তারিখে হাজির থাকতে হবে। আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানালে শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।’
এর আগে গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল ধর্ষণ মামলায় মামুনুল হকের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান ছিল। তারই অংশ হিসেবে গত ২৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের চতুর্থ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ছিল। তবে সেদিন মামুনুল হক আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। সে কারণে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ মামলায় ৪০ সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ২৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতে ইসলামের সে সময়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুল ও তার কথিত স্ত্রীকে ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ।
রয়েল রিসোর্ট–কাণ্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ বছরের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে অভিযোগ গঠন করা হয়।