X
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
৭ বৈশাখ ১৪৩২

দৌলতদিয়া যৌনপল্লি ছাড়তে চান ৩৫০ নারী

মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী
০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৩আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৩৫

করোনাভাইরাসের সময় থেকে রাজবাড়ীতে দেশের সর্ববৃহৎ দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন যৌনকর্মীরা। পদ্মা সেতুর চালুর পর পল্লিতে শুরু হয়েছে হাহাকার। খদ্দেরের অভাবে জীবিকা সংকটে রয়েছেন তারা। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীরা।

জানা গেছে, যৌনপল্লিতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে যৌনকর্মীর সংখ্যা এক হাজার ৩০০ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৫০ জন নিয়মিত। বাকিরা অনিয়মিত। প্রায় ৩০০ বাড়ি রয়েছে। শিশুর সংখ্যা ৬০০। বর্তমানে সাড়ে ৩৫০ বয়স্ক নারী রয়েছেন।

পল্লি ঘুরে দেখা গেছে, এখন আর সেই আগের মতো ভিড় নেই। সুনসান নীরবতা চারদিকে। এক সময় পল্লির প্রধান গলিতে ভিড় লেগে থাকলেও সেই গলি এখন অনেকটাই ফাঁকা। খদ্দেরের আশায় নারীরা সেজে ঘরের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তবে এখন আর খদ্দের সেভাবে আসে না বলে জানান বেশ কয়েকজন যৌনকর্মী।

সেখানে কথা হয় ফাতেমার সঙ্গে। তিনি বলেন, দিন তারিখ মনে নেই কবে আসছিলাম। তবে শুধু মনে আছে, যেদিন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয় সেদিন এখানে আমার আসা। আমার বাড়ি ঝিনাইদহ। তিন সন্তান রয়েছে। তারা এই জগত থেকে অনেক দূরে। আমি একাই পল্লিতে আছি। আমার বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে। পল্লির ভেতরে মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। কাজের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এখান থেকে চলে যেতে চাই।

দৌলতদিয়া যৌনপল্লি ছাড়তে চান ৩৫০ নারী

ছন্দা (৫৭) বলেন, পল্লীর অবস্থা একসময় ভালো ছিল। বর্তমানে খুব খারাপ। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট ও লঞ্চ ঘাটে লোকজন আসে না। সবাই পদ্মা সেতু হয়ে যায়। তাই আমাদের হাহাকার শুরু হয়েছে। আমরা এখন চলে যেতে চাই। কিন্তু আমাদের তো যাওয়ার মতো কোনও জায়গা নেই। সরকার যদি আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে বেঁচে থাকতে পারবো।

আরেকজন বলেন, দৌতলদিয়া ফেরি ঘাটে যখন যানজট লেগে থাকতো তখন ভালো ছিলাম। খদ্দের আসতো পল্লিতে। কিন্তু এখন কেউ খবর নেয় না। আমরা এখান থেকে চলে যেতে চাই। সরকার যদি আশ্রয়ণের ঘরে থাকার জায়গা করে দিতেন আমরা চলে যেতাম।

পল্লিতে রয়েছে ‘অসহায় নারী ঐক্য সংগঠন’। সংগঠনের সভানেত্রী ঝুমুর বেগম বলেন, পল্লির মধ্যে ৩৫০ জন বয়স্ক নারী আছেন। তাদের চরম খাদ্য সংকট শুরু হয়েছে। তারা এখন চলে যেতে চায়। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘৫০ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছেন তাদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে’।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লি দৌলতদিয়া। পদ্মা সেতুর চালুর পর এখানে ভিন্ন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। আমি সরেজমিনে সেখানে গিয়েছিলাম। পল্লির সবাই আমাদের সমাজের অংশ। সেখানে কয়েকটি সংস্থা কাজ করে। আমি নির্দেশনা দিয়েছি ৫০ বছরের ওপরের নারীদের তালিকা প্রস্তুত করতে। চিন্তাভাবনা করবো তাদের কীভাবে পুনর্বাসন করা যায়।

/এফআর/
সম্পর্কিত
গৃহকর্মী ও যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ
অবশেষে ময়মনসিংহে যৌনকর্মী ও তাদের সন্তানদের জন্ম নিবন্ধন শুরু
যৌনপল্লির এক মেয়ের সঙ্গে দুই জনের প্রেমের ঘটনায় একজনকে হত্যা
সর্বশেষ খবর
চোলাই মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু: গ্রেফতার ৪
চোলাই মদপানে দুই যুবকের মৃত্যু: গ্রেফতার ৪
পুলিশ হত্যামামলার আসামি এক শিশুর মামলা প্রসঙ্গে যা বললেন আসিফ নজরুল
পুলিশ হত্যামামলার আসামি এক শিশুর মামলা প্রসঙ্গে যা বললেন আসিফ নজরুল
নাইজেরিয়ায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৫৬
নাইজেরিয়ায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৫৬
নসরুল হামিদের ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্টসহ ৭০ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
নসরুল হামিদের ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্টসহ ৭০ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
সর্বাধিক পঠিত
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
গাজীপুরে সেই দুই শিশুকে হত্যা করেছেন মা: পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, বিপাকে পুলিশ
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৩ ভুল
রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৩ ভুল
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা: নিন্দা জানালো ভারত
প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার চায় এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার চায় এনসিপি: নাহিদ ইসলাম