কক্সবাজার শহরের প্রধান নদী বাঁকখালীতে দখল-দূষণের ভয়াবহ চিত্র দেখে হতাশা প্রকাশ করলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পয়েন্টে নেমে প্যারাবন নিধন করে তৈরি করা অবৈধ বসতবাড়ি, দোকানপাট, পোলট্রি ফার্ম, চিংড়িখামার, আবাসনের জন্য নির্মিত প্লট দেখেন দুই উপদেষ্টা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পুলিশ সুপার মো. সাইফুদ্দিন শাহিন, পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
এরপর দুই উপদেষ্টা নদীর পেশকারপাড়া অংশে যান। সেখানেও দখল-দূষণের দৃশ্য দেখেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুই উপদেষ্টা। এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নদীর অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল হয়ে গেছে। শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। নদীর জায়গা নদীকে ফেরত দিতে হবে। নৌবন্দরের জায়গাও থাকতে হবে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে নদীবন্দর হবে, আর দখলদাররা নদীর তীর দখল করে অট্টালিকা বানাবে, তা হতে দেওয়া যায় না। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় উচ্ছেদের বিষয়টি দেখবে, আর পরিবেশ মন্ত্রণালয় দেখবে পরিবেশের বিষয়টি। নৌবন্দর স্থাপনের লক্ষ্যে খুব দ্রুত বাঁকখালী নদী থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দখল-দূষণে বাঁকখালী নদী এখন মৃতপ্রায়। অবৈধ স্থাপনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আছেন। আবার নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। নদী বাঁচাতে সবকিছু করা হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার নামে বরাদ্দ দেওয়া কক্সবাজারের প্রায় ১২ হাজার একর ভূমি বন বিভাগের কাছে ফেরত দেওয়া হবে। কক্সবাজারের নদী, বনভূমি ও সি-বিচ দখল-দূষণমুক্ত করা হবে। প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) অনুমতি ছাড়া কোনও কিছু নির্মাণ করা যাবে না। পরিবেশ অধিদফতর, বন বিভাগ এবং জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি-বেসরকারি নির্মাণ বিবেচনায় নেওয়া হবে না।’