চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার রান্ধুনীমুড়া গ্রামে মাদকের টাকার জন্য বাবা তাজুল ইসলামকে (৬৫) দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অপরাধে ছেলে মো. সুমনকে (৩৪) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ সামছুন্নাহার এই রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সুমন উপজেলার রান্ধুনীমুড়া গ্রামের কাজীমুদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে। সুমন একজন মাদকাসক্ত। এর আগেও মাদকের জন্য টাকা না পেয়ে স্বজনদের মারধরের ঘটনায় সে কারাভোগ করে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সুমন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ায় তাকে পরিবার থেকে চিকিৎসা করানো হয়। এরপরও সে মাদক ছাড়েনি। ২০১৮ সালের ৩ জুন বিকালে মাদকের জন্য টাকা না দেওয়ার পূর্বের রেশ ধরে নিজ বাড়ির মসজিদসংলগ্ন খালের মধ্যে সুমন তার বাবা তাজুল ইসলামকে নৌকা থেকে কাঠ উঠানোর সময় হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে পেটে এবং পায়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ওই সময় বাড়ির লোকজন তাজুল ইসলামকে উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় তাজুল ইসলামের মেয়ে হালিমা বেগম পাখি বাদী হয়ে আপন ছোট ভাই সুমনকে হত্যা মামলার আসামি করে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর ১১ জুন পুলিশ আসামি সুমনকে গ্রেপ্তার করে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ওই সময়কার হাজীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খলিলুর রহমান চৌধুরী। তিনি মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কোহিনুর বেগম বলেন, ‘মামলাটি প্রায় ৭ বছর চলাকালীন সময়ে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। আসামি তার অপরাধ স্বীকার করায় এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন।’
আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।