লক্ষ্মীপুরে হেলমেট পরে এক সাংবাদিককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন একদল যুবক। সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে শহরের দক্ষিণ তেমুহনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই সাংবাদিকের নাম রুবেল হোসেন। তিনি সদরের লাহারকান্দি ইউনিয়নের আবিরনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা মেইলের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ও লক্ষ্মীপুর জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সদস্য। লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি করে শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সোমবার রাতে শহরের দক্ষিণ তেমুহনি এলাকায় সাংবাদিক রুবেলকে আটক করেন হেলমেট পরিহিত ১২-১৫ জন ব্যক্তি। এ সময় তাকে মারধর করা হয়। হেলমেট পরিহিতরা জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মী। মারধরের পর তারাই পুলিশকে খবর দেন। পরে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পর রুবেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে হত্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমি নির্দোষ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমি স্বাভাবিক জীবন আর পেশাগত কাজে ফিরতে চাই।’
রুবেলের বাবা ফজল করিম বলেন, ‘সোমবার রাতে রুবেল শহরের ওই এলাকায় অবস্থান করছিল। সেখানে একদল লোক এসে তাকে মারধর করে পুলিশে দেয়। তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ভাষ্যমতে, পরিকল্পিতভাবে রুবেলকে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়।
এর আগে হত্যা মামলায় সাংবাদিক রুবেলকে আসামি করার বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তারা সাংবাদিককে হয়রানি না করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাংবাদিক রুবেল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে পুলিশে দেন। মঙ্গলবার দুপুরে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।’
পুলিশ জানায়, গত বছরের ৪ অগাস্ট শহরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান। এ ঘটনায় আফনানের মা নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৬০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় সাংবাদিক রুবেলকে আসামি করা হয়।