বরিশালের গৌরনদীতে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার এক যুবক তিন দিন পর মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত যুবকের নাম সাগর মোল্লা (২২)। তিনি গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের সিরাজ মোল্লার ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার বিকালে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন গৌরনদীর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাত ১টার দিকে সাগর উপজেলার সালতা গ্রামের এক বাসিন্দার বাড়িতে প্রবেশ করেন। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে চোর সন্দেহে তাকে আটক করে পিটুনি দেন। খবর পেয়ে পুলিশ উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন দিন পর মৃত্যু হয়।
সাগরের বাবা সিরাজ মোল্লা জানান, গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পর জানতে পারি চোর সন্দেহে ছেলেকে গ্রামবাসী পিটিয়ে আহত করেছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
সিরাজ মোল্লা বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে সাগর ডুমুরিয়ায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সময় সালতা গ্রামের আসিফ খান, মজিবর খান, আলামিন মোল্লাসহ ১০-১২ জন তাকে আটকে মারধর করে। এতে সাগরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তারাই আবার সাগরকে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করবো আমি।’
তবে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসিফ খান বলেন, ‘ওই দিন রাত ১টার দিকে আমাদের বাড়িতে চোর প্রবেশ করায় আমরা চিৎকার শুরু করি। এ সময় গ্রামবাসী জড়ো হয়ে ধাওয়া করে এক চোরকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। এখানে পরিকল্পিত হত্যার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’
ওসি ইউনুস মিয়া বলেন, ‘দুপুরে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য বিকালে মর্গে পাঠানো হয়। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা হত্যা মামলা করবেন। মামলার পর তদন্তে বেরিয়ে আসবে, পরিকল্পিত হত্যা নাকি কোনও কারণ ছিল।’