নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় টিকটক আসক্তি নিয়ে ক্ষোভ এবং পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী লাকী বেগমকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী শাকিব মাহমুদ (২৪) মেলায় নাগরদোলায় তুলে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার শাকিব পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিটি পুলিশ উদ্ধার করেছে জানিয়ে ওসি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব জানিয়েছে স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে মেলায় নিয়ে যায়। হত্যার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি বাজার থেকে সোমবার ছুরিটি কিনেছিল।’
হত্যার কারণ হিসেবে ওসি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিব দাবি করেছে তার স্ত্রী টিকটকের জন্য ভিডিও নির্মাণ করতেন, যা শাকিব পছন্দ করতো না। এ ছাড়া স্ত্রী পরকীয়ায় যুক্ত বলেও সন্দেহ ছিল তার। এসব বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াও হয়। এর জেরে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্ত্রীকে মেলায় নিয়ে যায়। রাতে মেলায় একটি নাগরদোলায় ওঠে দুজন। সেখান থেকে নামার আগমুহূর্তে স্ত্রীর গলায় ছুরি দিয়ে জখম করে। হাসপাতালে নেওয়ার পর স্ত্রী লাকী বেগমের মৃত্যু হয়।’
এর আগে সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের ওরসের মেলায় নাগরদোলায় তুলে লাকী বেগমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি উপজেলার কালাপোল এলাকার মনছুর আলীর মেয়ে। ঘটনার পরই নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল এলাকা থেকে শাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগরের মঙ্গল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় রাতেই মামলা করেন লাকীর বাবা মনছুর। মামলায় শাকিবকে একমাত্র আসামি করা হয়।
নিহত লাকী বেগমের মা শেফালী বেগম বলেন, ‘এক বছর আগে তার মেয়ের সঙ্গে শাকিবের বিয়ে হয়। লাকী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। ১৫ দিন আগে লাকী ও শাকিব আমাদের বাড়িতে আসে। গত রবিবার দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। একপর্যায়ে লাকীকে মারধর করে শাকিব। তার মোবাইলও ভেঙে ফেলে শাকিব। সোমবার সন্ধ্যায় মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাগরদোলায় ওঠে। এরপর হত্যাকাণ্ড ঘটে। আমি শাকিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’