ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চুরির অপবাদ দিয়ে তিন নারীর চুল কেটে নির্যাতন করেছেন কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুমন দাস (৩২) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার মসজিদপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটকের বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন।
ওসি ছমিউদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চালানো হয়। সোমবার বিকালে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।’
এর আগে রবিবার রাতে উপজেলার পৌর এলাকার সড়ক বাজারে এনসিসি ব্যাংক লিমিটেডের নিচে অবস্থিত চাঁদপুর অ্যালুমিনিয়াম স্টোরের সামনে তিন নারীকে মারধরসহ চুল কেটে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আটক সুমন আখাউড়া সড়ক বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এম ইলেকট্রিক কর্নারের স্বত্বাধিকারী ও উপজেলার মসজিদপাড়ার বাসিন্দা। ঘটনার সঙ্গে উপজেলার লাল বাজারের বাসিন্দা মো. রাব্বিসহ কয়েকজন যুবক জড়িত রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। রাব্বি সড়ক বাজারের মা টেলিকমের স্বত্বাধিকারী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত ৮টার দিকে চাঁদপুর অ্যালুমিনিয়াম স্টোরে চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন নারীকে আটক করেন দোকানি। তাদের কাছ থেকে চোরাই পণ্য উদ্ধার করা হয়। পরে সুমন, মো. রাব্বিসহ স্থানীয় কয়েকজন যুবক তিন নারীকে প্লাস্টিকের পাইপ ও লোহার রড দিয়ে মারধর করেন। ওই সময় সুমন ও তার সহযোগী রাব্বি বোরকা পরিহিত নারীদের মাথার কাপড় খুলে ফেলেন। একপর্যায়ে ওই নারীদের মাথার চুল কাটেন সুমন। এ সময় ওই নারীদের সঙ্গে থাকা একটি শিশু ভয়ে চিৎকার করতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে রাতেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে আখাউড়াজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান অনেকে।
এ নিয়ে সোমবার সকালে স্থানীয়রা আখাউড়া থানা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে অনেকে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করেন। বিকালে সুমনসহ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়ে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানায় পুলিশ।
ওসি ছমিউদ্দিন বলেন, ‘অভিযুক্ত একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত রাব্বিসহ আরও কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’