ঈদের দ্বিতীয় দিনে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। পাশাপাশি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাসহ অন্য বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছিল এসব বিনোদনকেন্দ্রে।
পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে আসা আশিক আরেফিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে লাখো দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। বলা যায় পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের টানেল এলাকা থেকে শুরু করে খেজুরতলা পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য ছিল। পতেঙ্গা সড়কে যানবাহনের চাপ ছিল অনেক বেশি। আমি পরিবার-পরিজন নিয়ে পতেঙ্গায় সময় কাটাতে এসেছি। ছেলে-মেয়েরা বেশ আনন্দ উপভোগ করেছে।’
পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক কামরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মঙ্গলবার পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত সকাল থেকে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল। ঈদের দিনের চেয়ে দ্বিতীয় দিনে জনসমাগম বেশি ছিল। প্রায় এখ লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। আগামী দুই দিন দর্শনার্থীর চাপ থাকবে। তবে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকাল থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশের টিম সতর্ক অবস্থানে ছিল।’
এদিকে, নগরের ফয়’স লেক এলাকায় অবস্থিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়ও দর্শনার্থীদের প্রচণ্ড ভিড় ছিল। চিড়িয়াখানার চিকিৎসক ও ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিনে রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় হয়েছে চিড়িয়াখানায়। সকাল থেকে সারাদিনে ২০ হাজার ৬০০ জন দর্শনার্থী টিকিট নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছেন। প্রতি টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। ভিড় থাকলেও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অন্যান্য বছর ঈদে ১২ থেকে ১৩ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটতো। এবার রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থী এসেছেন। নিরাপত্তার জন্য চিড়িয়াখানায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পরিচালিত এই চিড়িয়াখানায় ৬৮ প্রজাতির ৫২০টি পশুপাখি রয়েছে। শিশুদের জন্য চিড়িয়াখানায় পৃথক কিডস জোন আছে। সেখানে দোলনাসহ বিভিন্ন রাইড রয়েছে। এ চিড়িয়াখানায় আছে বিরল সাদা বাঘ। এ সবকিছু দর্শনার্থীদের আকর্ষণীয় করে তুলেছে।’
একইভাবে নগরের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র পাহাড়তলীতে রেলওয়ের জলাশয় ফয়’স লেকে গড়ে তোলা এমিউজমেন্ট পার্ক এবং সি ওয়ার্ল্ড, জেলা প্রশাসক পরিচালিত ডিসি পার্ক, নগরের পতেঙ্গা এলাকায় অবস্থিত প্রজাপতি পার্ক, কর্ণফুলী নদীর অভয় মিত্র ঘাট, আগ্রাবাদ জাতি তাত্ত্বিক জাদুঘর এবং হালিশহর সাগর পাড়েও প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। নগরের বাইরেও জেলার ১৫টি উপজেলায় বিনোদনকেন্দ্রগুলো অর্থাৎ সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সাগরপাড়, চন্দ্রনাথ পাহাড়, মীরসরাইয়ে মহামায়া লেক, আনোয়ারায় পারকি সমুদ্রসৈকত, রাউজানে মহামুনি মন্দির, অনিরুদ্ধ বড়ুয়া অনি শিশুপার্ক, বেতাগী কর্ণফুলী নদীর পাড়, রাউজান রাবার বাগান ও ফটিকছড়ি চা বাগানেও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল এদিন।