লক্ষ্মীপুরে বেআইনিভাবে একটি তিনতলা ভবনসহ চার কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করেছেন আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) বিকালে লোকজন নিয়ে শহরের মধ্য বাঞ্চানগর এলাকার ওই ভবনটিতে আনোয়ার তার প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। পরে ভবনের সামনে অন্তত ১০টি ট্রাক ও ড্রাম্প ট্রাক রেখে সামনের অংশ দখল করে রাখেন। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ভবন ও জমির মালিক মো. মাঈন উদ্দিন।
মাঈন উদ্দিন জানিয়েছেন, ওই জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে একটি ব্যাংক থেকে নয় কোটি টাকা ঋণ নেন জমির মালিক মাঈন উদ্দিন। ধারদেনায় পড়ে তিনি জমিটি বিক্রির জন্য আনোয়ারের সঙ্গে সাড়ে চার কোটি টাকা নির্ধারণ করেন। এর মধ্যে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না চুক্তি করেছেন।
মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংকের ঋণের ঝামেলা শেষ করে আনোয়রকে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্যাংকের ঋণের সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি। এর মধ্যে জমিটি দখলে নিতে আনোয়ার পাঁয়তারা চালিয়ে আসছিলেন। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি। তিনি আমাকে ২৮ লাখ টাকা দিয়েছেন। আমি তা লভ্যাংশ হিসেবে ফেরত দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি নিচ্ছেন না। আজ অবৈধভাবে ভাড়াটে লোকজন এনে আমার সম্পত্তি দখল করেছেন। আমার ভবনে ইস্টিকুটুমের সাইনবোর্ড ছিল, তিনি সরিয়ে তার প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছেন। আজ রাতে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেবো।’
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘৯ মাস আগে ২৮ লাখ টাকা দিয়ে জমি কেনার জন্য মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বায়না করেছি। চুক্তি অনুযায়ী তিনি আমাকে ভবনসহ জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। প্রায় চার কোটি টাকা আমার ব্যাংকে পড়ে আছে। তা আমি তুলতে পারছি না। জমির দখল পেতে আমি সাবেক সেনাসদস্য আব্দুল মতিন, স্থানীয় বিএনপি নেতা লোকমান হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হারুনুর রশিদ, ছাত্র সমন্বয়ক রায়হান, এনামুল হক ও জাবেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের সমন্বয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। এখন বায়না চুক্তির ভিত্তিতে আমি ভবনসহ ওই জমি দখল করেছি।’
ছাত্র সমন্বয়ক এনামুল হক বলেন, ‘জমির কাগজপত্র সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে আনোয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার হঠাৎ জমি দখল করেছেন বলে শুনেছি। কেন দখল করেছেন, তা জানি না।’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘জমির মালিককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তিনি অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’