ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি স্থানে দুই দিনের ব্যবধানে দুটি ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। দুই ঘটনা চৌদ্দগ্রামের ফাল্গুনকরা এলাকায় ঘটেছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ডাকাত দল হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়। এর এক দিন পর একই জায়গায় একই সময়ে একই কায়দায় মালয়েশিয়ান প্রবাসী বেলাল হোসেনের গাড়িতে ডাকাতি হয়।
জানা গেছে, বেলাল হোসেন মালয়েশিয়ান প্রবাসী। তিনি বিমানবন্দর থেকে ভাড়া করা প্রাইভেটকার যোগে তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞার শরিফপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। তথ্যটি শনিবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহামেদ।
ওসি বলেন, শনিবার (১ মার্চ) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার ফাল্গুনকরা মাজার নামক স্থানে সশস্ত্র ডাকাত দল প্রবাসী বেলালের ভাড়া করা প্রাইভেটকারে হামলা চালায়। এ সময় তার সব মালামাল ও টাকা পয়সা কেড়ে নেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রবাসীকে থানায় নিয়ে আসি। এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক জাবেদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ওসি আরও জানান, প্রবাসী বেলাল মালয়েশিয়া থেকে শুক্রবার রাত ১০টায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। রাত আড়াইটায় তিনি বিমানবন্দর থেকে (ঢাকা মেট্রো- ঘ-২৩-৭৭০২) ভাড়া করা প্রাইভেটকারে করে তার স্বজনদের নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ৭/৮ জনের ডাকাত দল পিকআপে করে এসে প্রবাসীকে বহন করা প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায় চালক প্রাইভেটকারটির নিয়ন্ত্রণে নিলে ডাকাত দল পিকআপ থেকে নেমে অস্ত্রের মুখে প্রবাসীকে জিম্মি করে পাঁচটি মোবাইল, এক ভরি স্বর্ণ, তিন হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, চারটি মালামালের প্যাকেট লুট করে নেয়। যার আনুমানিক মূল্য ছয় লাখ টাকা।
প্রবাসী বেলাল হোসেন বলেন, ঈদ করার জন্য তিন বছর পর প্রবাস থেকে দেশে আসি শুক্রবার রাতে। বিমানবন্দর থেকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়ির উদ্দেশে রওনা করি। পথিমধ্যে মহাসড়কের মেঘনা ব্রিজ পার হয়ে যাত্রা বিরতি করি। আবারও রওনা করলে দাউদকান্দি এলাকায় বিশাল যানজটে আটকা পড়ি। এ সময় চালক উল্টা লেন দিয়ে গাড়িটি অনেক দূর নিয়ে আসে এবং একপর্যায়ে চালক জাবেদ খান মহাসড়কের একটি স্থানে নেমে পান খেয়ে আবারও গাড়িটি আমাদের বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন। পথিমধ্যে মহাসড়কের ফাল্গুনকরা এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে ত্রিপল মোড়ানো একটি পিকআপ ভ্যান এসে প্রাইভেটকারে ধাক্কা দেয়। এ সময় প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাচ্ছিল। চালক প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ নিলে ডাকাত দল পিকআপ থেকে নেমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ভাঙচুর করে। গাড়িতে থাকা আমার সব মালামাল ও নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তারা আমার পাসপোর্টও কেড়ে নেয়। আমি অনেক কষ্টে ডাকাত দল থেকে পাসপোর্ট ফেরত নিই।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, মহাসড়কে চৌদ্দগ্রামে প্রবাসীর গাড়িতে ডাকাতির সংবাদ পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসেছি। ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। ডাকাত দলকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) একই জায়গায় ডাকাত দল চক্র হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের সবকিছু লুট করে নিয়ে যায়।