নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় যুবদল কর্মী কবির হোসেনকে (৩৭) গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মামলার এজাহারনামীয় আসামি শাহ আলম (৫৪), মো. সহিদ ওরফে কালাম (৪০) ও সন্দেহভাজন কাউছার আলম (৪০)। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনায় নিহত কবিরের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে ছয় জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করা হয়। এর আগে শুক্রবার দুপুরে উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের সুজায়েতপুর গ্রামে হত্যাকাণ্ড ঘটে।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পরই পুলিশের একাধিক দল ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। শুক্রবার রাতে এজাহারনামীয় দুজনসহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার দুপুরে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে আসা একদল মুখোশধারী অস্ত্রধারী বিএনপি কর্মী কবির হোসেনকে গুলি করে। তখন তিনি মাটিতে পড়ে গেলে পায়ের রগ এবং গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা অটোরিকশাযোগে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কবিরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
দলীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, কবির হোসেন ক্যাডারভিত্তিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার বড় ভাই আলমগীরকে আট বছর আগে সন্ত্রাসীরা হত্যা করার পর কবির নিজেই একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। আলমগীর চন্দ্রগঞ্জের বাশার মেম্বারের নেতৃত্বে পরিচালিত বাশার গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাশার মেম্বার প্রায় ৪-৫ বছর আগে র্যাবের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। কবির হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় হাজী টোলার একটি গ্রুপের ৫ আগস্টের পর থেকে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। আবার তার ভাই আলমগীরের হত্যাকারীরাও তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে জায়গা ও দোকান নিয়ে বিরোধ ছিল তার। ৫ আগস্টের পর এলাকায় ফিরে আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। এসব কারণে হত্যার শিকার হতে পারেন বলে ধারণা করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।