কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় ৫৬ দিন পর ভেসে উঠেছে ডুবে থাকা রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতুটি। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে ঝুলন্ত সেতু এলাকা পরিদর্শনে এমন চিত্র চোখে পড়ে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙামাটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনা ঝুলন্ত সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে ডুবে ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, টানা কয়েকদিন ধরে কাপ্তাই লেকের পানি কমে আসায় জেগে উঠছে রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতু। বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় এতদিন সেতুটি পানিতে ডুবে ছিল। পানি সরে যাওয়ায় ইতোমধ্যে সেতু পরিষ্কার এবং রঙের কাজ শুরু করছে পর্যটন করপোরেশন।
গত ২৩ আগস্ট থেকে সেতুটি ডুবে থাকা এবং ৮ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করার কারণে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা মো. আসলাম উদ্দিন ও নাছির হোসেন বলেন, ‘রাঙামাটি আসার পর শুনেছিলাম ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে গেছে। তা-ও দেখতে এসেছিলাম। এসে দেখি ভেসে উঠেছে। অবশেষে হাঁটতে পেরেছি ঝুলন্ত সেতুতে।’
পর্যটন নৌযান ট্যুরিস্ট বোট কল্যাণ সমিতির সভাপতি এ বি এম সালা উদ্দিন জানান, দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে পর্যটকশূন্য রাঙামাটি। এখানকার সবাই না খেয়ে কষ্টে দিন পার করছে। সেতুটি ভেসে উঠেছে, এবার সরকার যদি পর্যটক ভ্রমণে বিধিনিষেধ তুলে দেয় আশা করি পর্যটকরা রাঙামাটি বেড়াতে আসবে। তাহলে সবার দুঃখ দূর হবে।’
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে আসায় ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতু। কিছু সংস্কারকাজ চলছে। সেতুতে পর্যটক চলাচলে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা-ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেতু ডুবে থাকায় রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের প্রতিদিন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আশা করছি, পর্যটক আসলে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’
প্রসঙ্গত, ঝুলন্ত সেতু পানিতে ডুবে থাকায় গত ২৩ আগস্ট থেকে সেতুটি দিয়ে পর্যটকদের চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ১৯৮৬ সালে রাঙামাটি জেলা শহরের তবলছড়ি এলাকায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ৩৩৫ ফুট দীর্ঘ নয়নাভিরাম সেতুটি নির্মাণ করে। দুই পাহাড়ের মাঝখানে দুটি পিলারের ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন এই সেতুটি পর্যটন শহর রাঙামাটির প্রতীক হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে।