চাঁদপুরের ৩টি মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। এ নিয়ে জেলা পুলিশের প্রস্তুতি থাকলেও আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাকে চাঁদপুর আদালতে তোলা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কয়েকটি সূত্র।
চাঁদপুর জেলা পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মামলায় হাজিরার জন্য সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে আনতে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। তবে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতেই এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার খবর পাওয়া যায়।
জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় চাঁদপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয় চাঁদপুর আদালতে। এসব মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য সকালে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আর সম্ভব হয়নি।
দুটি মামলার তদন্তে রয়েছেন মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মকবুল হোসেন এবং উপপরিদর্শক লোকমান হোসেন। এর মধ্যে গত ১৮ জুলাই চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিকের বাড়ি মনিরা ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় দীপু মনি ও তার ভাই টিপুকে হুকুমের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
দ্বিতীয় মামলা চাঁদপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দীপু মনি, তার ভাই টিপু ও সেলিম মাহমুদসহ ৬২৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবক নুরুল ইসলাম খান।
এ ছাড়া তৃতীয় মামলা চাঁদপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের পূর্ব-পশ্চিম পাশের সড়ক ভবন এলাকায় বেআইনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেন জনৈক মুক্তার আহমেদ।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী সলিমুল্লাহ সেলিম বলেন, ‘আজ সকালে ৩টি মামলায় আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখানোর জন্য দীপু মনিকে চাঁদপুর আদালতে আনার কথা। কিন্তু দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি ও তার সিন্ডিকেট মানুষকে অনেক হয়রানি করেছে। দুর্নীতি ও সীমা লঙ্ঘনের জন্য ভুক্তভোগীরা তাকে খুঁজছে। তিনি চাঁদপুরে রাজনীতির সোহার্দ্য ও সম্প্রীতি ধ্বংস করেছেন। আমার কাছে খবর আছে, প্রকৃত ও ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে খুঁজছে। তিনি তাদের বিভিন্ন সময় বঞ্চিত ও অসম্মান করেছেন। এ ছাড়া যারা গত ১৭ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তারা সবাই দীপু মনির কাছে কৈফিয়ত চাইতে অপেক্ষায় আছেন। এ অবস্থঅয় যদি কেউ এসে হামলা চালায় বা কোনও ঝামেলা করে তার দায়িত্ব কে নেবে? নিরাপত্তার জন্য আমার কাছে সহায়তা চেয়েছিল, কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার আমি কে? তার নিরাপত্তা দেবে প্রশাসন আর আওয়ামী লীগ।’
এ বিএনপি নেতা ও আইনজীবী আরও বলেন, সন্ধ্যা ৭টায় আদালত বসানোর একটা চেষ্টা ছিল। কোর্টের নিয়ম হলো ৯ থেকে ৫টা পর্যন্ত। তবে ম্যাজিস্ট্রেট যদি বসা থাকেন তাহলে কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইচ্ছা করলে চালাতে পারবেন। কিন্তু কারও জন্য বিশেষ সময়ে বিশেষ কোনও কোর্ট বসানো যাবে না। আইনি বিধান নেই। এটি নিয়ে আইনজীবী মহলেও আপত্তি আছে। বিশেষ কোর্ট বসাতে হলে প্রজ্ঞাপন লাগবে।’