বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবলীগ ও শিক্ষার্থীসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬০ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. সোহেল রানা রবিবার (৪ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার বেলা ১২টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে ঝুমুর পর্যন্ত এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিকের বেশি মানুষ।
নিহত ১০ জনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান এবং রায়পুর চরমোহনা গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র মো. ওসমান। বাকি ৮ জনের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানান সদর থানার ওসি।
নিহত আফনানের মামা হারুনুর রশিদ জানান, আফনানকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাথায় গুলি করে ও পিটিয়ে হত্যা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে সৌদি আরবে মারা যান আফনানের বাবা সালেহ আহমদ। এক মাস আগে তার লাশ দেশে এনে দাফন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ অবস্থান নেয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহউদ্দিন টিপুর বাসায়। আন্দোলনকারীদের একটি অংশ বাসার সামনে গেলে তাদের লক্ষ্য করে বাসার ভেতর থেকে শটগানের গুলি ছোড়া হয়।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অরূপ পাল বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে তিন জনের লাশ সদর হাসপাতালে রাখা রয়েছে। আহত ৬০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৫০ জন গুলিবিদ্ধ।’