কুমিল্লা সদর দক্ষিণে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড ও সাত জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরী গ্রামের মো. হাজী আতর আলীর ছেলে তোফায়েল আহমেদ তোতা (৩৮), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে কামাল হোসেন (৪৮), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৮), ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মামুন (২৮), মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে বাবুল (৩৫) ও মৃত আনোয়ার আলীর হারুনুর রশিদ (৪৫)। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলাধীন ধনাইতরীর মৃত জুনাব আলীর ছেলে হায়দার আলী (৬৫), হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে আ. মান্নান (৩২), মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে জামাল হোসেন (৪৫), আ. খালেকের ছেলে আবুল বাশার (২৮), মৃত আ. রশিদের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত আ. খালেকের ছেলে আ. কাদের (৩২) ও এজহারবহির্ভূত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন একই গ্রামের মৃত ইউসুফ মিয়ার ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৪৫)।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- একই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে আমান (৪০) ও একই উপজেলার গ্রাম চৌয়ারার জুনাব আলী সেলিম মিয়া (৫০)।
হত্যাকাণ্ডের শিকার হন- একই এলাকার গিয়াস উদ্দিন ও জামাল হোসেন। তারা সম্পর্কে চাচাতো জেঠাতো ভাই।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১২ আগস্ট রাতে ধনাইতরী জামতলা এলাকায় একটি দোকানে ঢুকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়াসহ আসামিরা গিয়াস উদ্দিন ও জামাল হোসেনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রথমে গিয়াস উদ্দিনকে পরে জামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গিয়াসের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫) বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে সদর দক্ষিণ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
আসামি হারুনুর রশীদ ও আ. কুদ্দুসের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আসামি সাত জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রত্যেককে অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ সময় আসামি আমান ও সেলিমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি জহিরুল ইসলাম সেলিম ও অতিরিক্ত কৌঁসুলি মজিবুর রহমান বাহার।