ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় দুর্বৃত্তের গুলিতে আয়াশ রহমান ইজাজ (২৩) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বুধবার (৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে শহরের কলেজপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নিহত ইজাজ কলেজপাড়া এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে। এলাকাবাসী ও স্বজনেরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আয়াশ রহমান ইজাজকে খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করেন হাসান আল ফারাবী জয় নামে এক যুবক। জয় জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বলে নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন আনারস প্রতীক নিয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। এ সময় কলেজপাড়া থেকে শাহাদাৎ হোসেন শোভনের সমর্থনে একটি বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিলে শিক্ষার্থী আয়াশ রহমান ইজাজ ছিলেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই একই এলাকার বাসিন্দা ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসান আল ফারাবী জয় নামে এক যুবক ইজাজের মাথায় পরপর দুটি গুলি করেন। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান ইজাজ। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
নিহতের চাচাতো ভাই জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের পর বিজয় মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় জয় হঠাৎ করে রাস্তার মাঝে সবার সামনে ইজাজকে মাথায় গুলি করে। পরে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা ঢাকায় পাঠান। ঢাকায় নেওয়ার পথে ইজাজ মারা যায়। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
নিহত ইজাজের চাচা আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। কেন তাকে এভাবে গুলি করে হত্যা করলো আমরা এর বিচার চাই।’
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।
ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় কলেজপাড়া এলাকার একটি অটোরিকশার গ্যারেজ থেকে রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনও কোনও মামলা হয়নি।