‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিষ্টান দেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বক্তব্য দিয়েছেন; তার জবাবে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানতে চাই, এটা জনগণের সামনে পরিষ্কার করবেন। কারা চায়, কেন চায়, কীভাবে চায়? শুধু বললেই তো হবে না। জনগণকে সেটার জন্য অবশ্যই তৈরি করতে হবে।’
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকালে ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম মিলনায়তনে ‘চট্টগ্রাম ফোরাম’ আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই প্রশ্ন ছুড়েছেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘জাতিসত্তার রূপকার: রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
গত ২৩ মে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের এক বৈঠকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিষ্টান দেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশে এয়ার বেজ বানানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’ তবে কোন দেশ এই প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি উল্লেখ করেননি প্রধানমন্ত্রী।
চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি মারাত্মক কথা কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কথাটা কী? কোন একটা শক্তি বাংলাদেশের একটা অঞ্চল ও মিয়ানমারের একটা অংশকে নিয়ে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চায়। নতুন একটা ভূখণ্ড তৈরি করতে চায়। খ্রিষ্টান ভূখণ্ড। তিনি নামও উল্লেখ করেছেন। ভয়াবহ ব্যাপার।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমার দেশের অংশ নিয়ে অন্য কোনও রাষ্ট্র অন্য কিছু করতে চায়, আমি বসে শুধু কথা-ই বলবো। এটার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেবো না। আমি জানতে চাই, এটা জনগণের সামনে পরিষ্কার করবেন। কারা চায়, কেন চায়, কীভাবে চায়? শুধু বললেই তো হবে না। জনগণকে সেটার জন্য অবশ্যই তৈরি করতে হবে।’
‘তার (শেখ হাসিনার) সে শক্তি নেই। তিনি তো তামাশার খেলা খেলে ক্ষমতায় গেছেন’ বলেও উল্লেখ করেন ফখরুল। বলেন, ‘একবার ওর সঙ্গে ভাব, আরেকবার ওর সঙ্গে ভাব। এভাবে টিকে আছেন। এভাবে টিকে থাকা যায় না।’
‘যে সরকারের পেছনে জনগণের ম্যান্ডেট না থাকে, জনগণের সরকার না থাকে, জনগণের প্রতিনিধিত্ব না থাকে, তারা কখনও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারে না’ বলেও উল্লেখ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে চাই, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই, আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ভয়াবহ দানব সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’
সেমিনারে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলমের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ।