রাঙামাটির লংগদুতে ইউপিডিএফের এক সদস্য ও এক সমর্থককে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে জেলার সদর উপজেলার কুতুবছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে সংগঠনটি।
শনিবার (১৮ মে) বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সোমবার (২০ মে) রাঙামাটি জেলায় অর্ধদিবস (ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা) সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সমাবেশে ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙামাটি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নিশি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নিকন চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ধর্মশিং চাকমা।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসন বিধি (১৯০০ সালের রেগুলেশন) বাতিল করার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে ইউপিডিএফ যখন আন্দোলন গড়ে তুলেছে ঠিক সে সময় সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও আন্দোলন বানচাল করার জন্য সন্তু লারমা তার সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে লংগদুতে ইউপিডিএফ কর্মী বিদ্যাধন চাকমা ও সমর্থক ধন্যমনি চাকমাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।
সন্তু লারমা জুম্মো জনগণের স্বার্থের বিপরীতে গিয়ে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, ৯৭ সালে চুক্তির নামে সন্তু লারমা জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। এখন জনগণের পক্ষে যারা আন্দোলন করছেন তাদেরকে হত্যা করে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
সমাবেশ থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক বাবলু চাকমা লংগদুর বড় হাড়িকাবায় ইউপিডিএফের কর্মী ও সমর্থক হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার রাঙামাটি জেলায় ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। অবরোধ সফল করতে জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় লংগদুর বড়হাড়িকাবার ভালেদি ঘাটের পার্শ্ববর্তী স্থানে সাত জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী ইউপিডিএফ কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ হামলায় ঘটনাস্থলে ইউপিডিএফ সদস্য বিদ্যা ধন চাকমা ওরফে তিলক (৪৫) ও সমর্থক ধন্য মনি চাকমা (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এই ঘটনায় ইউপিডিএফের রাঙামাটি জেলা ইউনিটের সংগঠক সচল চাকমা সন্তু লারমা নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে। তবে জনসংহতি সমিতির লংগদু উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মনি শংকর চাকমা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এটি ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ বলে পাল্টা অভিযোগ করেন।