পটুয়াখালীর দুমকিতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার জুলাই আন্দোলনে শহীদের কলেজছাত্রী মেয়ে (১৭) আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত ১৮ মার্চ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এই শহীদকন্যা।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন কলেজছাত্রী। পরে তাকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাইয়ুম মৃত্যুর বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে রাত ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালেই এসেছি আমরা। আমার সঙ্গে আদাবর থানা পুলিশ রয়েছে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।’
আদাবর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কমল চন্দ্র ধর বলেন, ‘তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যাজনিত। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে ওই কলেজছাত্রীর বাবা গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার শহীদ বাবাকে দুমকি উপজেলার বাড়িতে দাফন করা হয়। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন কলেজশিক্ষার্থী। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিল। এরপর ২০ মার্চ দুমকি থানায় মামলা করেন ছাত্রী।
মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়। ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার পর থেকে কলেজছাত্রী ঢাকার আদাবর থানা এলাকার শেখেরটেকে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছিলেন। শনিবার রাতে সেখানেই আত্মহত্যা করেন।
কলেজছাত্রীর এক চাচা জানিয়েছেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বিচার হবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কায় ছিল। এরই মধ্যে এই ঘটনা ঘটলো।