বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ছিলেন একজন বিকারগ্রস্ত মানুষ। খুন-গুমসহ রক্তের হোলিখেলায় তিনি সুখ খুঁজে পেতেন। তাই দ্রুত আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি তাদের বিচার না করে মেয়াদ শেষ করে, জাতি তাদের কখনও ক্ষমা করবে না।’
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে শহরের মাছুমপুর ফুটবল মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনাসহ বিগত সরকারের নেতাকর্মীদের বিচার দাবি করে জনসভায় মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘হাজার হাজার গুম-খুনের কারণে এই দলের নেতা শেখ হাসিনাসহ সবার বিচার করতে হবে। সবার বিচার শেষে যদি কোনও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী অবশিষ্ট থাকে, তবেই তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হোক। আমার বিশ্বাস, বিচার হলে আওয়ামী লীগ চালানোর মতো কোনও ব্যক্তি থাকবে না। আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চাই৷’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ে এই সরকার বিভিন্ন উদ্যেগ নিয়েছে৷ বিশেষ করে গত মাহে রমজানে দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়েছে৷ লোডশেডিং হয়নি৷ এ ছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সাফল্য এসেছে।’
সম্প্রতি নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার নিন্দা জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে ইসলামবিরোধী প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আমলেও এত বড় দুঃসাহস কেউ দেখায়নি৷ তারা ইসলামের আদেশকে বড় বৈষম্য বলে দাবি করেছেন। নিজ ধর্ম বাদ দিয়ে যেকোনও ধর্মের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার অভিব্যক্তি করেছেন। এই কমিশন ইসলামকে কটাক্ষ করেছেন৷ আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ নারী এর বিপক্ষে অবস্থান নেবেন।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান একদলীয় বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষের ইচ্ছা ও অধিকারকে জলাঞ্জলি দিয়েছেন। তিনি ভারত থেকে ইন্দিরা গান্ধীর দেওয়া ধর্মীয় মতবাদ আমদানি করেন৷ তখন থেকেই বাংলাদেশ ভারতের শৃঙ্খলে জিম্মি হয়ে আছে৷ ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলাদেশে আর কোনোদিন ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না৷’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি আহমাদুল্লাহ সিরাজীর পরিচালনা এবং জেলা শাখার সভাপতি মুফতি আব্দুর রউফের সভাপত্বিত্বে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন– বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ, যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি শরাফত হুসাইন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মুসা, কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহিনুর আলম।
জনসভায় জেলা ও উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।