যৌন হয়রানি ও পরীক্ষার নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের মুখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন) পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ।
গত ১৩ এপ্রিল রাতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ফেসবুকে যৌন হয়রানির পরপর তিনটি অডিও ফাঁস হলে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। তখন এ ব্যাপারে কেউই লিখিত অভিযোগ না করায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমলে নেয়নি। প্রশাসন পুরো বিষয়টি সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়। একজন ছদ্মনামে একটি অভিযোগ দিলেও সেটি প্রশাসন আমলে নেয়নি।
সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও ছাত্র উপদেষ্টা ড. ইলিয়াছ প্রামাণিককে সদস্যসচিব করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
রেজিস্ট্রার জানান, তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
একই ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও এক শিক্ষার্থীকে নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগ এনে ২১ এপ্রিল দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া চত্বরে তার কুশপুত্তলিকা বানিয়ে জুতা পেটা করেন। ওইদিন রাতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি শিক্ষক তানজিউল ইসলামের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি দেখানো ও মার্ক টেম্পারিং করে ফলাফল খারাপ করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
তবে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তানজিউল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা বেনানি অভিযোগ সাজানো নাটক এবং তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য করা হয়েছে দাবি করেন। তিনি তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাঘাটন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তবে পরিসংখ্যান বিভাগের অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।