চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ‘জব্বারের বলী খেলা’য় ১১৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ বলী। ফাইনালে একই জেলার বলী রাশেদকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকাল ৪টা থেকে নগরীর লালদীঘি ময়দানে এ খেলার উদ্বোধন করেন নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
ফাইনাল রাউন্ডে প্রায় ৩০ মিনিটের বেশি সময় খেলার পর প্রধান রেফারি হাফিজুর রহমান ‘টেকনিক্যাল আউট’ ঘোষণা করেন রাশেদকে।
খেলা শুরুর আগেই নানা বয়সী দর্শকদের আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় লালদীঘির ময়দান। বলী খেলার ১১৬তম আসর পৃষ্ঠপোষকতা করছে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন।
খেলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সদস্যসচিব আব্দুল জব্বারের নাতি শওকত আনোয়ার বাদল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এবারের বলী খেলার ১১৬তম আসরে ১২০ জন বলী নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্যে ৮০ জনকে বাছাই করে প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাইনালে রাসেলকে হারিয়ে বলী খেলার ১১৬তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হন বাঘা শরীফ বলী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফাইনালে প্রায় ৩০ মিনিট লড়াইয়ের পর রাশেদকে “টেকনিক্যাল আউট” ঘোষণা করেন রেফারি। বিজয়ী ঘোষণা করা হয় বাঘা শরীফ বলীকে। তারা দুজনই কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা।’
এদিকে, বলীখেলাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার থেকে লালদীঘি ময়দানের আশপাশের এলাকাজুড়ে বৈশাখীমেলা জমে উঠেছে। মেলা আয়োজক কমিটি সূত্র জানিয়েছে, ১৯০৯ সালে এই মেলার আয়োজন শুরুর পর কখনও বন্ধ ছিল না। তবে দুই বছর করোনা মহামারির কারণে খেলা এবং বৈশাখী মেলার ১১১ ও ১১২তম আসর বাতিল করা হয়। এরপর থেকে পুনরায় প্রতি বছর যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জানা গেছে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুবকদের সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলী খেলা। এরপর প্রতি বছর ১২ বৈশাখ লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় জব্বারের বলী খেলা। এই খেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘির আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা। মেলায় কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।