গাজীপুরের শ্রীপুরে ঈদ বোনাস, দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে আড়াই ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) উপজেলার জৈনাবাজর (আবদার) এলাকার এইচডিএফ অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার তিন শতাধিক শ্রমিক মহাসড়কের জৈনা বাজারে বিক্ষোভ করেন। এতে ওই মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। খবর পেয়ে দুপুর ১টায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, ঈদ বোনাস এবং মার্চ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা। কার্যাদেশ না থাকায় ঈদের আগেই মার্চ মাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস না দিয়ে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে চলতি মাসের ১০ তারিখ কারখানা খোলার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ কাজ না থাকায় সে সময় খোলেনি। নোটিশ টাঙিয়ে আজ বৃহস্পতিবার কারখানা খোলার ঘোষণা দেয়। সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে দেখেন কর্তৃপক্ষ কাউকে না জানিয়ে পাঁচ দিন ছুটি বাড়িয়ে আগামী ২২ এপ্রিল কারখানা খোলার ঘোষণা দিয়ে পুনরায় নোটিশ দিয়েছে।
শ্রমিকরা আরও বলেন, ‘মালিকপক্ষ আমাদের বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে সুষ্ঠু কোনও সমাধান না দিয়ে বারবার কারখানা বন্ধের নোটিশ টাঙিয়ে দিয়ে সময় পার করছে। ছুটি শেষে কাজে যোগ দিতে এসে দেখি কারখানা বন্ধের নোটিশ। আমাদের ন্যায্য বকেয়া পাওনা পরিশোধ এবং কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে আজ আমরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।’
কারখানার মালিক হুমায়ুন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারখানায় পর্যাপ্ত কাজ না থাকায় সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের সব দাবি পূরণ করে কারখানা খুলে দেবো।’
শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জৈনা বাজার (আবদার) এলাকার এইচডিএফ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে দুপুর ১টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
গাজীপুর শিল্পপুলিশের ইন্সপেক্টর আবদুল লতিফ বলেন, ‘সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে যান চালাচল স্বাভাবিক হয়।’