সুনামগঞ্জ ও উজানে চলতি মাসের শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এমন অবস্থায় ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত ডিসি, ইউএনও এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি অফিসের সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এ ছাড়াও নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলতে ৮০-৯০ শতাংশ ধান পেকে গেলে কৃষকদের ধান কাটার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার বিকালে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘১৮ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ ও উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে কৃষকরা যেন দ্রুত ধান কাটতে পারেন সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরকম বৃষ্টিপাতে ফসলরক্ষা বাঁধের কিছু না হলেও হাওরে জলাবদ্ধতা তৈরি হলে পানি নিষ্কাশনে অসুবিধা হবে। তাই ৮০ থেকে ৯০ ভাগ পেকে যাওয়া ধান দ্রুততম সময়ের মধ্যে কেটে ফেলতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের অধীনে কর্মরত সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের ধান কাটা মৌসুমে কোনও ছুটি দেওয়া হবে না। ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করতে অনুরোধ করেছি। ছাত্ররা তালিকা দিয়েছেন কোন উপজেলায় কারা সমন্বয় করবেন। কোনও কৃষক শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে না পারলে আমাদের জানান, আমরা ইউনিয়ন ভিত্তিক ছাত্র প্রতিনিধিদের দিয়ে ধান কাটার ব্যবস্থা করবো। এ ছাড়াও ধান কাটায় অসুবিধা হলে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সহযোগিতা করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, ‘১৮ তারিখ থেকে আগামী ৭ দিন মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, হাওরের নিচু এলাকা নিমজ্জিত হতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে কৃষকের পাকা ধান কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছুটি বাতিল করেছেন।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১৫০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন হাওরের ধান কর্তন করছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন ধান কৃষকের গোলায় উঠবে, যার বাজার মূল্য ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগও প্রজ্ঞাপন জারি করে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল উপস্থিত ছিলেন।