বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি, চিরায়িত উৎসব পয়লা বৈশাখ আজ। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পালন করা হচ্ছে দিনটি। সোমবার সকালে জেলা প্রশাশনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শহরের পৌরমুক্ত মঞ্চ ময়দান থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি বের হয়। পরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফারুকী পার্কের বৈশাখী মঞ্চে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহেতশামুল হক সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
শোভাযাত্রায়, পেঁচা, টেপাপতুল, মুখোশ, জাতীয় পাখি দোয়েল, জাতীয় মাছ ইলিশসহ বাহারি রকমের ফেস্টুন স্থান পায়। পাশাপাশি বাঙালি গ্রামীণ সাংস্কৃতির অংশ মাছ ধরার উপকরণ জাল, ডুলা, পলোসহ বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শন করা হয় শোভাযাত্রায়।
পরে ফারুকী পার্কের বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। এতে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও স্থানীয় শিল্পীরা ‘এসো হে বৈশাখ’ প্রাণের সঙ্গীতের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। পরে নাচ, গান, আবৃত্তি পরিবেশনের ফাঁকে ফাঁকে বর্ণাঢ্য লাঠি খেলা, সাপখেলা, মোরগ লড়াই প্রদর্শন করা হয়। এ সময় উৎসুক দর্শকরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে খেলোয়ারদের উৎসাহিত করেন।
পরে বৈশাখী মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে এত সুন্দর অনুষ্ঠান আমার চোখে পড়েনি। কারণ এর আগে আমি বিভিন্ন জেলায় কাজ করেছি। আজকে মনোমুগ্ধকর ও স্বাধীনভাবে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলা নববর্ষকে উৎসবের দিন বললে ভূল হবে। এটা আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার দিন। আমাদের শেকড়ের সঙ্গে মেলবন্ধনের দিন। আজকের দিনে আমরা একে অপরকে চিনতে পারছি, জানতে পারছি, মনোভাব প্রকাশ করতে পারছি। এটি আমরা ধরে রাখতে চাই।’ সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্যে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘আজ সবার চোখেমুখে আনন্দ, স্বতঃস্ফূর্ততা। আমাদের সন্তানদেরকে হিংসা-সহিংসতা ভূলে যেতে হবে। ঝগড়া-বিবাদ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বদনাম আছে। এর থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আজকে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ তিনি নতুন দিনে নতুনভাবে কাজ করার জন্যে সবার প্রতি আহ্বন জানান।
এ সময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।