দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের জটলা নেই। বলা হয়ে থাকে, একসময় দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের ঈদের একমাত্র ভাবনার বিষয় ছিল এই মহাসড়ক। দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বিগত চার বছর ধরে এই মহাসড়কে তেমন যানজট লাগেনি। যাত্রী, চালকরা জানান, এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় সড়কে আরও স্বস্তি ছিল।
রবিবার মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, নিমসার বাজার, চান্দিনা বাজার ও চৌদ্দগ্রাম এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, কোথাও যানজটের কোনও ছিটেফোঁটাও নেই। তবে বাজারগুলোতে যানবাহনের সামান্য চাপ পড়ে মাঝে মাঝে।
ঢাকা থেকে রওনা হয়ে মিয়ামি পরিবনের একটি গাড়ি কুমিল্লায় এসে থেমেছে প্রায় ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর। ওই বাসের যাত্রী লাকি আক্তার, বোরহান উদ্দিন, মো. মোশারফ হোসেনসহ ৫ জন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় জাঙ্গালিয়া বাস স্ট্যান্ড এলাকায়। তারা বাসের দিকে ইশারা করে বলেন, ‘এই বাসে আমরা এসেছি। ২ ঘণ্টার সামান্য বেশি সময় লেগেছে। কোথাও গাড়ি দাঁড়ায়নি। যানজটের তো প্রশ্নই আসে না।’
এ সময় পাশে থাকা যাত্রী সোহেল বলেন, ‘আগে ভোরে ভোরে বাসে উঠতাম। আর কুমিল্লায় এসে বাস থামতো দুপুরে। টোলপ্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কমপক্ষে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন দুই মিনিটে টোলপ্লাজা পার হয়েছি। বাজারগুলোতে গাড়ির গতিরোধ না হলে দেড় ঘণ্টায় আসতে পারতাম।’
এদিকে, এশিয়া এয়ারকনের কুমিল্লার চালক মো. শাহজালাল বলেন, ‘আগে এত দ্রুত আসা যেত না। পথে ইফতার সেহরি দুটোই বাসে বসে করতে হতো। ৮ বছর গাড়ি চালাই। গত চার বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। তবে কখন যানজট লেগে যায় বলা যায় না। ওইদিন দেখলেন না’, এই বলে তিনি শুক্রবার দুপুরে দাউদকান্দি এলাকার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন– ‘এগুলোর কথা বলা যায় না। এটার জন্য কেউ দায়ী নয়।’
হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম বলেন, ‘গত কয়েক রাতে ঘুমাতে পারিনি। হাইওয়ের সব পুলিশ সদস্য ঘাম ঝরানো শ্রম দিচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত কোনও যানজটের খবর পাইনি। যেহেতু ঈদ কাল বা পরশু, সেহেতু আজ গাড়ির চাপ আছে। দক্ষিণের ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা রয়েছে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ৬৩৫ হাইওয়ে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে নতুন যুক্ত হয়েছেন ২৫০ জন। এ ছাড়া সারা বাংলাদেশে আমরাই প্রথম মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণে ২৩৮ রোভার সদস্যকে অস্থায়ীভাবে কাজে লাগাচ্ছি। তাদের ট্রেনিং করিয়েছি। তারা মহাসড়কের কাজের দায়িত্বে আছে। এ ছাড়াও আমার বিভিন্ন স্পটে জেলা পুলিশ ও প্রশাসন সহযোগিতা করছে। যানজট লাগার সম্ভাবনা দেখছি না। তবে বড় দুর্ঘটনার কথা তো নিশ্চিত হয়ে বলা যায় না।’