পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে আল আমিন (৩৮) নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি ও বিএসএফের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকালে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ঠাকুরগাঁও সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল গোলাম রব্বানী এবং বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিএসএফের শিলিগুড়ি সেক্টর কমান্ডার শ্রী পি কে শিং। এ সময় বিজিবি ও বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং করেন বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল গোলাম রব্বানী। তিনি বলেন, ‘বিএসএফ সীমান্ত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, যা অপ্রত্যাশিত এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বৈঠকে বিএসএফকে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য কঠোরভাবে প্রতিবাদ, নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে বিএসএফ তাদের বক্তব্যে জানিয়েছে, ১০-১৫ জনের একটি দল রাতের অন্ধকারে একাকী বিএসএফ জোয়ানকে আক্রমণ করে। তাদের জোয়ান আত্মরক্ষার্থে ফায়ার করে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং এই জন্য তারা অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে বিএসএফ সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং এ ধরণের ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বস্ত করেছে।’
বিজিবির এই সেক্টর কমান্ডার আরও বলেন, ‘আমরা বিএসএফকে অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছি, বিনা বিচারে বাংলাদেশি কাউকে (চোরাকারবারি বা যে-ই হোক) গুলি করে হত্যা করা নির্দয়, অমানবিক বাজ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রের পরিবর্তে অপ্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা যেত, তাকে পাকড়াও করা যেত এবং আইনের আওতায় সোপর্দ করা যেত। প্রয়োজনে বিজিবি’কে অবহিত করা যেত, এতে বিজিবি ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতো।’
এর আগে, শনিবার (৮ মার্চ) ভোরে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নে ভিতরগড় বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ৭৪৪-এর সাব পিলার ৭ থেকে আনুমানিক ১৬০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে ভাটপাড়া নামক স্থানে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের জিন্নাতপাড়া এলাকার সুরুজ আলীর ছেলে আল আমিন।