জামিননামা কারাগারে পৌঁছালেও মুক্তি পাননি স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক পুলিশ সুপার (এমপি) বাবুল আক্তারের। রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে তার জামিনের আদেশ কারাগারে পৌঁছে।
বাবুল আক্তার মুক্তি পাবেন এমন আশায় বিকাল থেকে তার বর্তমান স্ত্রী মুক্তা এবং তার ভাইসহ বেশ কয়েকজন স্বজন কারাফটকে অপেক্ষায় ছিলেন। স্বজনদের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক সাবাদিকও সেখানে অপেক্ষায় ছিলেন।
পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মুক্তা চট্টগ্রাম কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। মুক্তা কারা অফিস থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কারাগারের কর্মকর্তারা বলেছেন আজ বাবুল আক্তারের মুক্তি হবে না। জামিননামা যাচাই-বাছাই শেষে কাল সোমবার সকালে মুক্তি দেওয়া হবে।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী মামুনুল হক চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ বিকাল সাড়ে ৪টার সময় বাবুল আক্তারের জামিননামা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। বাবুল আক্তারকে মুক্তি দেওয়া হবে এ জন্য আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত কারাফটকে অপেক্ষায় ছিলাম। পরে জানলাম, আজ নয়, কাল সোমবার সকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের জামিননামা কারাগারে পৌঁছেছে। তবে কারাগারে জামিননামা পৌঁছতে দেরি হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে।’
এর আগে গত বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার বেঞ্চ বাবুল আক্তারকে জামিনের আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, ‘স্ত্রী হত্যায় বাবুল আক্তারের মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্য পর্যায়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ৫৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো। এই মামলায় মোট সাক্ষী ৯৭ জন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহিরকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ের কাছে হত্যার শিকার হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এরপর তদন্তের দায়িত্ব পায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর পাল্টে যায় মিতু হত্যা মামলার গতিপথ। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে বাবুল আক্তারই মিতু হত্যার মূল আসামি।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাত জনকে আসামি করা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত।