মেয়ের দুধ কিনতে বাড়ির সামনে রাস্তায় গেলে শাহজালালকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে দাবি করা দেড় লাখ টাকা না পেয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে তার দুই চোখ উপড়ে ফেলে পুলিশ। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হলেও ক্রস ফায়ারের হুমকি দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে। ওই ঘটনার সাত বছর পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১১ জন পুলিশ ও আনসারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে খুলনার খালিশপুরে মহানগর হাকিম আমলি আদালত-২-এ পুনরায় মামলা করা হয়েছে। ভিকটিমের মা রেণু বেগম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
আদালতের বিচারক আল আমিন অভিযোগটি তদন্ত করতে সিআইডি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২০ অক্টোবর মামলার ধার্য দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলাটি বাদীপক্ষে পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট চৌধুরী তৌহিদুর হোসেন তুষার।
মুমিনুল ইসলাম জানান, ২০১৭ সালের ১৮ জুলাই রাত ৮টায় শাহজালাল তার সাত মাসের মেয়ের জন্য দুধ কিনতে খালিশপুরের নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির বাড়ির সামনের সড়কে আসেন। তখন তাকে খালিশপুর থানার তৎকালীন ওসি নাসিম খানের নির্দেশে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তার পরিবারের লোকজন থানায় গেলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে না পারায় রাতে তাকে নিয়ে পুলিশ ও আনসারের ১০ সদস্যের একটি দল গাড়ি নিয়ে বের হয়। শাহজালালকে বাইপাস সড়কে নিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে দুই চোখ তুলে ফেলে।
সকালে পরিবারের লোকজন থানায় গেলে বলা হয়, শাহজালাল নামে কোনও আসামি নেই। পরে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি অবস্থায় পায় পরিবার। ঘটনাটি খুলনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা সুমি আক্তার নামে একজনকে দিয়ে একটি মামলা করিয়ে শাহজালালকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল বাদীসহ পরিবারের সদস্যদের মাইক্রোতে করে তুলে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে জোর করে কয়েকটি সাদা স্ট্যাম্পে সই নিয়ে ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরবর্তী সময়ে ওই স্ট্যাম্প ব্যবহার করে আসামিরা আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়।
বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুবিচারের আশায় বাদী আদালতে পুনরায় মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২০ অক্টোবর সিআইডিকে তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক আল আমিন। এই মামলার নম্বর সি আর ৩৯৩/ ২৪ (খালিশপুর)।