রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি স্বামীকে গুলি করে হত্যার নয় বছর পর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন স্ত্রী। এই এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে। এজাহারে ১৮১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে পুঠিয়া থানায় এই এজাহারে বাদী হয়েছেন মাছুফা নামের এক নারী। তিনি চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ‘২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি পুঠিয়া থানার বানেশ্বর বাজারে তৎকালীন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবু সাঈদের নেতৃত্বে সংবিধান ও গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। আমার স্বামী মৃত মজির উদ্দিনকে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহী-৬ আসনের এমপি শাহরিয়ার আলমের নেতৃত্বে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গুলি চালানোর হুকুম দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।’
উল্লিখিত চার জন ছাড়াও এ ঘটনায় আসামি করা হয়েছে– সাবেক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এবং রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৬ আসনের সাবেক রায়হানুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদ, চারঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ও সাবেক এমপি শাহরিয়ারের পিতা শামসুদ্দিন, শাহরিয়ার আলমের ব্যক্তিগত সহকারী সিরাজুল ইসলাম, পুঠিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু, পুঠিয়ার সাবেক মেয়র রবিউল ইসলাম রবিসহ চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৮১ জনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২৬০ জনকে।
এ ছাড়াও পুঠিয়া থানায় আরও একটি এজাহার দায়ের করেছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। তিনিও এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি শেখ হাসিনা তাকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার হুকুম দেয়। এ ছাড়াও তাদের সমাবেশে হামলা চালানোর অভিযোগ আনেন। তিনি এজাহারে প্রধান আসামি করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়াও তিনি ৯১ জনের নাম উল্লেখ এবং ২৬০ জন অজ্ঞাত আসামি করেছেন।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘দুজন থানায় এজাহার দিয়ে গেছেন। এখনও মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি। এই দুই এজাহার মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে। এরপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’