বগুড়ায় রূপালী ব্যাংক লিমিটেড মহাস্থানগড় শাখার দুই কোটি ৬৯ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যবস্থাপককে পৃথক তিন ধারায় ২৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, দুই সিনিয়র অফিসারকে পাঁচ বছর করে এবং তিন গ্রাহককে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরে বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন– রূপালী ব্যাংক লিমিটেড মহাস্থানগড় শাখার ব্যবস্থাপক জোবায়েনুর রহমান, সিনিয়র অফিসার ইশরাত জাহান ও মাহাতাব হোসেন, গ্রাহক আজমল হোসেন, জাহিদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের পিপি আবুল কালাম আজাদ জানান, আদালত ব্যবস্থাপক জোবায়েনুর রহমানকে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ১০ বছর, ৪৬৭ ধারায় ১০ বছর এবং ৪২০ ধারায় সাত বছরসহ মোট ২৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ডদেশ দিয়েছেন। তিনটি সাজা একসঙ্গে চলমান থাকায় তাকে ১০ বছর সশ্রম কারাভোগ করতে হবে। সিনিয়র অফিসার ইশরাত জাহান ও মাহাতাব হোসেনকে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গ্রাহক আজমল হোসেন, জাহিদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেনকে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে হাজির ছিলেন।
এজাহার সূত্র জানায়, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড মহাস্থানগড় শাখা ব্যবস্থাপক জোবায়েনুর রহমান বিভিন্ন সময় পে-অর্ডার থেকে ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা আত্মসাৎ করেন। দুই সিনিয়র অফিসার ও গ্রাহকরা তাকে সহযোগিতা করেন। ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে তিনি চা পানের নামে শাখা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে গ্রাহকরা শাখায় ভিড় করেন। অনেক গ্রাহকের হিসাবে গরমিল পাওয়া যায়। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ওই টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের সত্যতা মেলে।
পরে রূপালী ব্যাংক বগুড়া অঞ্চলের ডিজিএম সরদার হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যবস্থাপক, দুই সিনিয়র অফিসার ও তিন গ্রাহকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট জিন্নুল হক, আতাউর রহমান, খায়রুল বাশার নিলুজ, খায়রুজ্জামান ও বিনয় কুমার ঘোষ রজত মামলা পরিচালনা করেন।