প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল এবং কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। রবিবার (৩০ জুন) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক মানববন্ধনে কোটা পদ্ধতিকে ‘বৈষম্যমূলক’ অ্যাখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে দুই দফা দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘কোটা প্রথায় নিয়োগ পেলে, দুর্নীতি বাড়ে প্রশাসনে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান, ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মেধাবীদের যাচাই কর, কোটা পদ্ধতি বাতিল কর’, ’১৮-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’সহ বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ডে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে রাকসু আন্দোলনের মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আজকে আমরা দুই দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। সেগুলো হলো– সরকারি চাকরিতে ১৯ শতাংশের বেশি কোটা রাখা যাবে না; যিনি কোটা ব্যবহার করবেন তিনি জীবনে একবারের বেশি এই সুবিধা নিতে পারবেন না।’
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি নিঃসন্দেহে একটি বৈষম্যমূলক পদ্ধতি। ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংসদে ঘোষণা দেন এবং তারই পরিপেক্ষিতে একটি পরিপত্র জারি করা হয়। সেই পরিপত্রটি ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেন। যেখানে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা বহাল থাকে। আমরা চাই, কোটা থাকুক তবে ১০ শতাংশের বেশি নয়। ১ শতাংশ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৩০ শতাংশ কোটা এটি নিঃসন্দেহে একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা। আর আমরা আরও চাই, একজন শিক্ষার্থী সারাজীবনে একবার কোটা ব্যবহার করবে। হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়, চাকরির সময় অথবা যেকোনও সময়, তবে মাত্র একবারই।’
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিকুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে একটি যুক্তিহীন এবং অবাস্তব রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা যদি উন্নত দেশের কোটা ব্যবস্থার দিকে তাকাই, আমরা দেখি আমেরিকায় স্বাধীনতা যুদ্ধ হওয়ার পরেও তাদের কোনও এরকম কোটা ছিল না। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু কোটা তারা রেখেছে। তেমনভাবে কানাডাতেও দেখি, কোনও কোটা নেই। আর বাংলাদেশে ৫৬ শতাংশ কোটা!’
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।