চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। যদিও ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে স্থগিত ২০টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ৯ জুন। বুধবার (৫ জুন) ৬০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ।
গত তিন ধাপের মতো এবারও ভোটে তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুয়েক জায়গায় সামান্য কিছু সহিংসতা ও অনিয়মের অভিযোগ এলেও তা নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলেনি। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল আগের মতোই কম। বেলা বাড়ার সঙ্গে কিছুটা বাড়লেও সেটা তেমন আশানুরূপ নয় বলে জানিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের স্থানীয় প্রতিনিধিরা।
দেশের ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় ভোট হয়েছে গত ৮ মে। এসব উপজেলায় গড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট পড়ে। প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮ জন নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হন ২২ জন। ২১ মে এ ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৮ শতাংশ। ২৯ মে তৃতীয় ধাপের ৮৭টি উপজেলার নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
প্রথম ধাপের রেকর্ডসংখ্যক কম ভোটের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর পেছনে কৃষকদের ধান কাটা ও বৃষ্টিসহ পাঁচটি কারণকে দায়ী করে পরে পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশাবাদী ছিল ইসি। কিন্তু পরের ধাপেও কাঙ্ক্ষিত ভোটার উপস্থিতি না হওয়ায় সরকারবিরোধী বিএনপির নির্বাচন বর্জনকেই মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার সুযোগ থাকলেও স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। অপরদিকে, বিএনপির অল্পকিছু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়লেও দলটি উপজেলা পরিষদের ভোট বর্জন করেছে।
চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় একজন চেয়ারম্যান, তিন জন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২৫১, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জনসহ মোট ৭২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ৫৮টি পৌরসভা ও ৮৭৪টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ছিলেন ২ কোটি ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ২৫৫ জন।
নির্বাচন উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জুন) রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোট (নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী ব্যতীত) অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসি। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ভোটগ্রহণের দুদিন আগে থেকে ভোটগ্রহণের পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।