রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় প্রায় ১০০ বিঘা জমির ৫৩টি পানের বরজ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু চাষি। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পওয়া যায়নি।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামের মাঠে পানের বরজে হঠাৎ করেই এই আগুন লাগে। পরে স্থানীয়রা খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষি আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে আগুন লাগে চাষি ইসহাকের পানের বরজে। এরপর মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক বরজে। এতে আনুমানিক ৮০ জন চাষির ১০০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে গেছে। এই আগুনে অনেক চাষির এক থেকে দেড় বিঘা করে পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তারা এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কীভাবে আগুন লেগেছে কেউ জানেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুনে বরজ এমনভাবে পুড়েছে, কোনও কিছু অবশিষ্ট নেই। সব বরজ নতুন করে তৈরি করতে হবে। বছরের এই সময়ে পানের দাম সবচেয়ে বেশি থাকে। এই সময় পানের বরজ পুড়ে যাওয়া মানে চোখের সামনে টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া। গ্রামবাসী যে যেভাবে পেরেছেন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
আরেক পানচাষি রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘তার এক বিঘার বেশি জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আবার নতুন করে বরজ তৈরি করতে শীত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এখন জমিতে পান রোপণের সময় না। এতে চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।’
এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান রঞ্জু বলেন, ‘সঠিক বলতে পারবো না, তবে পুড়ে যাওয়া বরজ ৬০-৭০ বিঘার বেশি হবে। আমরা চাষিদের তালিকা করতে বলেছি। আগামীকাল শনিবার তালিকা হাতে পাবো। এরপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে দেওয়া হবে। সরকারিভাবে কিছু টাকা পেলে চাষিদের উপকার হবে। এই ঘটনায় অনেক চাষি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। মাত্র পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে চাষিদের কোটি টাকার পান পুড়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে বাগমারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মেহেদী হাসান তুহিনের ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আক্তার হামিদ খান বলেন, ‘রাজশাহী শহর, বাগমারা, মোহনপুর ও আত্রাইয়ের চারটি ইউনিট ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় পান বরজের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে শতাধিক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত তা জানা যায়নি।’
এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে পুড়ে যাওয়া পানের বরজ পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সিগারেটের আগুন থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। এই ঘটনায় আনুমানিক ৯০ থেকে ১০০ বিঘা জমির পান পুড়ে গেছে।’