তিনটি গল্প দিয়ে এই লেখাটি শুরু করতে চাই। প্রথম গল্পটি আমার বড় কন্যাকে নিয়ে। সম্প্রতি তার চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। সেজন্য কন্যার মা পোশাক ও সাজগোজ করে রেডি করে দিচ্ছেন। তখন কন্যা আমার কাছে জানতে চাইলো আমরা কোথায় যাচ্ছি। আমি জানালাম আমরা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।
মেয়ে বললো, ‘আমি ডাক্তারের কাছে যাবো না।’ আমি জানতে চাইলাম, কেন?
মেয়ের জবাব, ‘ডাক্তার কি আমার নেংটু দেখবে?’
আমি বললাম, ‘চিকিৎসার প্রয়োজনে ডাক্তার দেখতে চাইতে পারে, মা।’
তারপর অনেক বুঝিয়ে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তারের চেম্বারে গিয়ে আরেক বিপত্তি। বেশ কিছু সময় অপেক্ষার পর ডাক্তার যখন রোগী দেখা শুরু করলেন, মেয়ে আর কোনোভাবেই ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে না। কারণ সে খুবই বিরক্ত। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে রয়েছে তার আশঙ্কা ও অস্বস্তি।
যাহোক, নির্ধারিত সময়ে ডাক পড়লো আমাদের। সেখানে ঢুকে দেখি আগে থেকে তিন জন রোগী, তাদের পরিচর্যাকারী বসে আছেন। একজনকে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। আরও দুই জন বসে আছেন। প্রথম জন চিকিৎসা পরামর্শ শেষ হলে আমাদের অপেক্ষার তালিকা হবে দুই। এভাবে যখন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হলো, কন্যা শুরু করলো কান্না। কারণ অনেক মানুষের সামনে সে কথা বলবে না। যাহোক, ডাক্তারের চিকিৎসা পরামর্শ নিয়ে আমরা বাবা-মেয়ে বের হয়ে দোতলা থেকে নিচে নামতেই কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির কর্মী আমাদের ঘিরে ধরে।
কন্যার চিকিৎসায় ডাক্তার প্রদত্ত ব্যবস্থাপত্রটির দেখতে চায়। ছবি তুলতে চায়। আমি না করে দিয়ে একটু এগোতেই সেই ব্যক্তিগুলোর পক্ষ থেকে এক ধরনের নেতিবাচক ভঙ্গি ও কথা কানে আসে আমার। যাহোক, চার বছর বয়সী কন্যার এই ব্যক্তিগত গোপনীয়তাবোধ আমাকে বেশ ভাবায়, আপ্লুত করে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় গল্পটি আমার কাজের অভিজ্ঞতা থেকে। জগতে যেসব স্থানের প্রতি আমি ঐশ্বরিক টান অনুভব করি তার মধ্যে শীর্ষে আছে হাসপাতাল। আমার চিন্তা, গবেষণা ও কাজের বেশির ভাগই আবর্তিত হয় হাসপাতালকে কেন্দ্র করে। সেই গল্প বিস্তারিত বলবো অন্য প্রসঙ্গে।
তবে এক একটি গবেষণা কাজে উত্তরবঙ্গে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে দীর্ঘসময় কাটাতে হয়েছে। জরুরি ও বহির্বিভাগে পর্যবেক্ষণ করেছি ডাক্তার, রোগী ও পরিচর্যাকারীর জোগীয় ক্রিয়া ও মিথস্ক্রিয়া। সেখানে দেখেছি ডাক্তারের সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য বাইরে রোগী ও স্বজনদের প্রাণপণ সংগ্রাম ও যুদ্ধ। চেম্বারে ডাক্তারের টেবিল ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে ১০ থেকে ১৫ জন করে রোগী। ডাক্তার একেক জন রোগীর সঙ্গে কথা বলছেন আর চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছেন। এখানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কোনও বালাই নেয়। উপস্থিত সবাই সবার রোগ, সমস্যা ও পথ্য সম্পর্কে জানছেন। পরে ডাক্তারের সঙ্গে আড্ডার ফাঁকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার তুললে তিনি জানান, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে এটা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাছাড়া রোগীরা এ নিয়ে তেমন সচেতন নন। ডাক্তারের এই উক্তিটি বাংলাদেশের রোগীদের অধিকারবোধ ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতাবোধ সম্পর্কে চিন্তা ও ভাবনার উদ্রেগ করে।
এরপর উপজেলা পর্যায়ের এই হাসপাতালে রোগীর গোপনীয়তার বিষয়টি উপলব্ধির জন্য কয়েকজন নার্সের সঙ্গেও কথা বলি। তাদের বেশির ভাগই চিকিৎসা ক্ষেত্রে এই গোপনীয়তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে মত দেন। তবে মাঝ বয়সী একজন নার্সের বক্তব্য আমার চিন্তা জগতে আলোড়ন তুলে। বলা যায় এই লেখাটির চিন্তাবীজ তার কাছ থেকেই এসেছে।
তিনি বলেন, “স্যার, এই রোগীর গোপনীয়তা কী তা আমি বুঝিয়ে বলতে পারবো না। তবে দুটি ঘটনার কথা বলি।” আমি বেশ আগ্রহ নিয়ে বললাম, ‘হ্যাঁ বলুন।” তখন তিনি বলেন, “সম্প্রতি এক মেয়ে রোগী এসেছিলেন এই হাসপাতালে। সেই রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন আমাদের জানায় রোগীটি বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। আত্মীয়-স্বজনদের কথা শুনে ও লক্ষণ দেখে আমরা চিকিৎসা প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতি নিই। তখন রোগীটি আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে কানে কানে কথা বলতে চায়। বিষয়টি আঁচ করে আমি স্বজনদের বাইরে যেতে বলি। তখন রোগীটি আমাদের জানায়, সে আসলে বিষ পান করেননি। বিষ পানের অভিনয় করছে মাত্র। স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে নানাভাবে নির্যাতন করছে, তাই ভয় দেখানোর জন্য এরকম করছে। বিষয়টি জেনে আমি অত্যন্ত সমব্যথী হই। কষ্ট পাই। স্যার, আমি কিন্তু রোগীর আসল কথা পরিবারের লোকজনকে বলিনি। কাউকেই বলিনি।”
এরপর আমি তার কাছে দ্বিতীয় ঘটনাটি জানতে চাই। তখন সেই নার্সটি বলেন, “স্যার, এক গর্ভবতী নারী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়। শিশু জন্মের জন্য অপারেশনের দরকার পড়ে তার। চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় আমি বুঝতে পারি এটি ওই নারীর দ্বিতীয় গর্ভধারণ। কিন্তু পরিবারের লোকজন বলছিল মেয়েটি প্রথম সন্তানের মা হতে যাচ্ছে। তারপর মেয়েটি একপর্যায়ে জানায়, তার আগে একবার বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে তার একটি কন্যাসন্তানও আছে। দ্বিতীয় বিয়েতে সেই সন্তানটির কথা গোপন করা হয়েছে। এই তথ্যও আমি কখনোই কাউকেই জানাইনি। স্যার, আমার কাছে মনে হয় রোগীর এই গোপনীয়তা রক্ষা করা আমার পেশাগত, মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।”
যাহোক, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষণাপত্র অনুযায়ী সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রশ্নে যেকোনও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রোগীর ১০টি অধিকার রয়েছে। আর সেই অধিকারগুলো হলো, সময় মতো, কার্যকরী ও উপযুক্ত সেবা পাওয়া; নিরাপদ প্রক্রিয়া ও অনুশীলন মেনে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া; প্রশিক্ষিত ও দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর কাছ থেকে সেবা পাওয়া; নিরাপদ চিকিৎসা উপকরণ এবং সেগুলোর নিরাপদ ও যৌক্তিক ব্যবহার করা; নিরাপদ ও সুরক্ষাময় স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা পাওয়া; মর্যাদা, সম্মান, শ্রদ্ধা, বৈষম্যহীন ও গোপনীয়তা; চিকিৎসার প্রশ্নে প্রয়োজনীয় তথ্য, শিক্ষা ও সহায়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারা; নিজের মেডিক্যাল রেকর্ড সম্পর্কে জানা; নিজের বক্তব্য প্রকাশ করতে পারা ও অন্যরা তা ঠিকমতো শোনা এবং যৌক্তিক ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় রোগী ও তার পরিবারের লোকজনের সম্পৃক্ত হওয়া। বর্তমান আলোচনাটি মূলত কোনও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে রোগীর মর্যাদা, সম্মান, শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া, বৈষম্যের শিকার না হওয়া এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নিশ্চয়তার অধিকার নিয়েই।
বাংলাদেশের সরকারি কিংবা বেসরকারি যেকোনও হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বাইরে বের হলেই একদল লোক চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। তারপর কোনও কিছু না বলে এক রকম জোর করেই তুলে নেয় চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রের ছবি। সেখানে থাকে রোগীর সব সমস্যার বিবরণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ ও ব্যবহারবিধি। এভাবে ব্যক্তিগত সমস্যার বিবরণ কয়েকজন অচেনা ব্যক্তির মোবাইলে চলে যায় প্রতিনিয়তই। শারীরিক অসুস্থতা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসকের পরামর্শ– কোনোটির কোনোরকম গোপনীয়তা রক্ষা করা হয় না। অন্যদিকে শারীরিক একটি সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে দেখা যায় আগেই আরও দুজনকে সেখানে বসিয়ে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকের সঙ্গে তাদের আলাপ, শারীরিক পরীক্ষা সবকিছুই অন্য রোগীর চোখের সামনে ঘটে। আগের রোগী বের হলে চেম্বারের ভেতর আরও দুজন রোগীকে নিয়ে আসা হয়। ডাক্তারকে সমস্যার কথা ঠিকমতো বলতে পারেন না। খুবই অস্বস্তি বোধ করেন কোনও কোনও রোগী। দেশের চিকিৎসকের চেম্বারে এটাই এখন প্রচলিত নিয়ম। প্রতিদিন এরকম অভিজ্ঞতার শিকার হচ্ছে বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ।
যাহোক, স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে রোগীর গোপনীয়তার বিষয়টি বহুমাত্রিক। এই গোপনীয়তার মাত্রাগুলো হলো রোগীর বাহ্যিক বা শারীরিক, তথ্যগত ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত। এখানে গোপনীয়তার মানে হলো একজন রোগী তার ডাক্তার, নার্স বা অন্য স্বাস্থ্যসেবাকর্মীকে যা বলেন, রোগী প্রদত্ত যেসব তথ্য চিকিৎসাকর্মীরা লিপিবদ্ধ করেন, রোগী যেসব ওষুধ সেবন করেন, ডাক্তার রোগীকে যেসব চিকিৎসা, পরীক্ষা ও পরামর্শ দেন এবং অন্যান্য একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের কাছে যেকোনও আঙ্গিকে প্রকাশ ও আলোচনা না করা; এবং প্রয়োজন ও অনুমতি ছাড়া অন্যে তা জানতে না পারা। এই গোপনীয়তা ইংরেজিতে প্রাইভেসি ও কনফিডেনশিয়ালিটি নামে অভিহিত করা হয়। মোটা দাগে প্রাইভেসি মানে হলো একজন ব্যক্তির একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য ও বিষয়াদি নিজের কাছে সংরক্ষণ করা ও সুরক্ষিত থাকা। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর অর্থ হলো রোগীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলো গোপন রাখা এবং রোগীর শারীরিক, মানসিক ও বাহ্যিক অবস্থা সম্পর্কে গোপনীয়তা রক্ষা করা।
অন্যদিকে কনফিডেনশিয়ালিটি মানে হলো ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রশ্নে অপর পক্ষের বিশ্বস্ততা। অর্থাৎ কারও কোনও তথ্য বা বিষয় জানার পর অন্য কারও কাছে প্রকাশ না করা। চিকিৎসা ক্ষেত্রে এর অর্থ হলো: রোগীর তথ্য শুধু অনুমোদিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সাথে বিনিময় করা; রোগীর অনুমতি ছাড়া কোনও তথ্য তৃতীয় পক্ষকে না দেওয়া এবং রোগীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নথিপত্র সুরক্ষিত রাখা। কাজেই প্রাইভেসি বা গোপনীয়তার মানে হলো রোগীর ব্যক্তিগত জীবনের নিজস্বতা রক্ষা করা। আর কনফিডেনশিয়ালিটি বা বিশ্বস্ততা হলো সেই গোপনীয় তথ্য রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি ও দায়িত্ব পালন করা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় রোগী যখন ডাক্তারের চেম্বারে যান, তখন প্রাইভেসি হলো চিকিৎসা পরামর্শ চলাকালে অননুমোদিত ও অপ্রাসঙ্গিক তৃতীয় কোনও পক্ষের উপস্থিতি না থাকা; পর্দা টেনে বা দরজা বন্ধ করে পরীক্ষা করা, রোগীর সঙ্গে কথা বলা, তার সমস্যার কথা শোনা এবং চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া। অন্যদিকে কনফিডেনশিয়ালিটি হলো সেই পরীক্ষার ফলাফল শুধু রোগী, চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা। অর্থাৎ প্রাইভেসি মানে হলো রোগীর একান্ত তথ্যাবলিতে কে প্রবেশ পারবে আর কে পারবে না সেই প্রশ্নে ব্যক্তিগত অধিকার নিশ্চিত করা। এর মূল লক্ষ্য হলো ব্যক্তির শারীরিক, তথ্যগত ও সিদ্ধান্তের গোপনীয়তার রক্ষা। এটি বৃহত্তর পরিসরে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।
অন্যদিকে কনফিডেনশিয়ালিটির বিষয়টি রোগী-ডাক্তার-নার্স ও অন্যান্য সেবাকর্মীদের পেশাদারি সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত। অনুমতি ছাড়া রোগীর যেকোনো তথ্য প্রকাশ না করার বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পর্কিত। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে রোগীর তথ্য ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ রোগের বিবরণী কিংবা অন্য কোনও তথ্য উপাত্ত জনপরিসরে প্রকাশ না করা। কাজেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যে প্রাইভেসি একজন রোগীর অধিকারকে নির্দেশ করে। আর কনফিডেনশিয়ালিটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দায়িত্ব, কর্তব্য, বাধ্যবাধকতা ও পেশাদারিত্বকে নির্দেশ করে। সুতরাং বলাই যায়, প্রাইভেসি ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশগম্যতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আর কনফিডেনশিয়ালিটি নিশ্চিত করে রোগী ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মীর মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস। প্রাইভেসি শারীরিক ও তথ্যগত সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত। অন্যদিকে কনফিডেনশিয়ালিটি পরিচালিত হয় পেশাগত নৈতিকতা ও সুনির্দিষ্ট নৈতিকতা দ্বারা।
এবার চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে তথা হাসপাতালে, ক্লিনিকে রোগীর তথ্যের সুলুক সন্ধান করা যাক। সহজভাবে বোঝার খাতিরে এই তথ্যগুলোকে কয়েকটি গুচ্ছে ভাগ করা যায়। যেমন, রোগীকে একান্তভাবে চিহ্নিত করা যায় এমন তথ্য, স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত তথ্য, ও আর্থ-সামাজিক তথ্য। রোগীকে চিহ্নিত করা যায় এমন তথ্যের মধ্যে আছে: রোগীর পূর্ণাঙ্গ নাম, লৈঙ্গিক পরিচয়, বাসস্থান ও যোগাযোগের ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ইত্যাদি। এছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: মেডিক্যাল রেকর্ড নম্বর, জরুরি যোগাযোগের ঠিকানা, প্রাথমিক পরিচর্যাকারী নাম ও ঠিকানা, পছন্দের ভাষা, ধর্ম ও ফার্মেসি ইত্যাদি।
আবার আর্থ-সামাজিক তথ্যের মধ্যে রয়েছে রোগীর পেশা, শিক্ষাস্তর, আয়, নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ইত্যাদি।
রোগীর একান্ত গোপনীয় তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে: ব্যক্তিগত ও জৈব-আর্থসামাজিক তথ্যের বিবরণ, রোগের ইতিহাস, রোগ নির্ণয় ও নির্ণীত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ, চিকিৎসা পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের বিবরণ, হাসপাতালের পরীক্ষাগারে নির্ণীত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল ও ইমেজিং প্রতিবেদন, ইন্স্যুরেন্স ও চিকিৎসা বাবদ খরচ সম্পর্কিত তথ্য, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যের বিবরণ, বিভিন্ন নেশাদ্রব্য ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্যের ইতিহাস এবং ব্যক্তির জেনেটিক তথ্যের বিস্তারিত বিবরণ। রোগ নির্ণয় ও নির্ণীত রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ সম্পর্কিত তথ্যের রয়েছে: রোগীর বর্তমান ও অতিসাম্প্রতিক কোনও রোগ, শল্যচিকিৎসা কিংবা অন্য কোনও চিকিৎসা প্রক্রিয়া, দীর্ঘমেয়াদি কোনও জটিল রোগ, রোগের পারিবারিক ইতিহাস, যেকোনও অ্যালার্জি, টিকা সম্পর্কিত তথ্য ও আগে হাসপাতালে ভর্তির ইতিহাস। চিকিৎসা পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের বিবরণ সম্পর্কিত তথ্যগুলো হলো ডাক্তার প্রদত্ত প্রেসক্রিপশন, পরামর্শ, নির্দেশমালা, ওষুধের নাম, ওষুধের ধরন, ওষুধের পরিমাণ, ওষুধ সেবনের পদ্ধতি, চিকিৎসা প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি, থেরাপির সময়সূচি, চিকিৎসাসেবা পরিকল্পনা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, ওষুধের মিথস্ক্রিয়া এবং বর্তমানে রোগী গ্রহণ করছেন এমন অন্য কোনও বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি ইত্যাদি।
অন্যদিকে হাসপাতালের পরীক্ষাগারে নির্ণীত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল ও ইমেজিং প্রতিবেদন সম্পর্কিত তথ্যগুলো হলো: রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা, এক্স-রে, এমআরআই, সিটি স্ক্যান, আল্ট্রাসাউন্ড, প্যাথলজি রিপোর্ট, স্ক্রিনিং টেস্ট ইত্যাদি। ইন্স্যুরেন্স ও চিকিৎসা বাবদ খরচ সম্পর্কিত তথ্যের মধ্যে আছে রোগীর স্বাস্থ্য ইন্স্যুরেন্সের আওতা, প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধাদি, চিকিৎসা বাবদ খরচ প্রদানের পদ্ধতি, ইন্স্যুরেন্স পলিসি নম্বর, ইন্স্যুরেন্সের আওতায় প্রাপ্য সুবিধা দাবি করার ইতিহাস এবং বকেয়ার পরিমাণ ইত্যাদি।
মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যেও বিবরণগুলো হলো: মানসিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকের মূল্যায়ন, থেরাপি নোট, আচরণগত মূল্যায়ন, চিকিৎসার অগ্রগতি, প্রদত্ত বিভিন্ন ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত, জটিল পরিস্থিতিতে করণীয়, ঝুঁকির মাত্রা মূল্যায়ন ও চিকিৎসা পরিকল্পনা। বিভিন্ন নেশাদ্রব্য ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্যের মধ্যে রয়েছে নেশাদ্রব্যের ধরন, নেশাদ্রব্য ব্যবহারের প্যাটার্ন, চিকিৎসা গ্রহণ, সুস্থতার অবস্থা, ড্রাগ স্ক্রিনিংয়ের ফলাফল, আনুষঙ্গিক জটিলতা, সহায়তা কর্মসূচি। ব্যক্তির জেনেটিক তথ্যগুলো হলো: জেনেটিক পরীক্ষার ফলাফল, জেনেটিক অবস্থার পারিবারিক ইতিহাস, সম্ভাব্য ঝুঁকির ধরন ও মাত্রা, জেনেটিক স্ক্রিনিং ফলাফল ইত্যাদি।
একটু তলিয়ে দেখলে আমরা খেয়াল করি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিময় করে নানান উপায়ে। যেমন, ডাক্তারের শল্যচিকিৎসা কেন্দ্র কিংবা ক্লিনিকে, বিশেষায়িত ক্লিনিকে, দাঁতের চিকিৎসাকেন্দ্রে, ওষুধের দোকানে, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে, যৌনস্বাস্থ্য ক্লিনিকে, শারীরিক বৈকল্যজনিত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে, পুষ্টি চিকিৎসা সেবাকেন্দ্রে, মাতৃ ও শিশুসেবা ক্লিনিকে, চক্ষুসেবা ও ফিজিওথেরাপিস্টের সেবাকেন্দ্রে; বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চাকেন্দ্রে, শিশু সদন, স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ইত্যাদি।
এই ডাক্তারের চেম্বারে এই প্রাইভেসির বিষয়টিকে দুইভাবে দেখা যায়। প্রথমত বাহ্যিক গোপনীয়তা। দ্বিতীয়ত যোগাযোগের সুরক্ষা। বাহ্যিক গোপনীয়তার মানে হলো ডাক্তারের চিকিৎসা পরামর্শ কক্ষটি এমন হওয়া যাতে ডাক্তার ও রোগীর কথোপকথন কোনও তৃতীয় পক্ষ সেখানে উপস্থিত কিংবা আশপাশ থেকে শুনতে না পায়। যেকোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় প্রয়োজনীয় পর্দার ব্যবস্থা করা এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। চিকিৎসা প্রক্রিয়া ও পরামর্শের সময় একান্ত দরকারি স্বাস্থ্যসেবাকর্মী ছাড়া অন্য কারও উপস্থিতি না থাকা; প্রয়োজনে শব্দ নিরোধক কক্ষে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা।
অন্যদিকে যোগাযোগের সুরক্ষার মানে হলো: গোপনীয়তা বজায় রেখে রোগীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা; রোগীর কোনও তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ না করা। চিকিৎসা প্রক্রিয়া শুরু করার আগে রোগ, তার পরিচর্যাকারী কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে প্রয়োজনীয় মতামত নেওয়া; রোগীর চাহিদামাফিক গোপনীয়তাকে যথাযথভাবে নথিবদ্ধ করা; রোগীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যগুলো কে জানতে পারবে আর কে জানতে পারবে না তা সুস্পষ্টভাবে আলোচনা করা। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বিনিময়ের প্রশ্নে রোগীর ইচ্ছা ও চাহিদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া; সংবেদনশীল তথ্য যেমন মানসিক স্বাস্থ্য ও যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য বিশেষ গুরুত্ব ও মনোযোগ দিয়ে ব্যবস্থাপনা করা।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যেকোনও তথ্যের ইলেক্ট্রনিক রেকর্ড, রোগীর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা কক্ষ, রোগীর শারীরিক অবস্থা ও রোগ সম্পর্কে এমনভাবে বলা যাতে করে অনুমতি ব্যতীত অন্য কেউ শুনতে, বুঝতে ও উপলব্ধি করতে না পারে; রোগীর যেকোনও তথ্য যথাযথ কারণ ছাড়া স্ক্রিনে প্রদর্শন না করা; রোগী-রোগ-স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্যভাণ্ডার যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করা; রোগীর সমস্ত সংবেদনশীল তথ্যে একান্ত অনুমতি ব্যতীত কারও প্রবেশাধিকার সীমিত করা; যেকোনও মেডিক্যাল বর্জ্য সঠিক, নিরাপদ ও গোপনীয়তার সঙ্গে পরিষ্কার করা।
রোগীদের গোপনীয়তা শুধুমাত্র চিকিৎসকদের দ্বারাই নয়, হাসপাতালের কর্মী, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই লঙ্ঘিত হয়। এই রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়া, বেহাত হওয়া কিংবা প্রকাশ হয়ে পড়ার বিষয়টিকে কয়েকভাবে ভাগ করা যায়। আর সেগুলো হলো: বাহ্যিক, ডিজিটাল ও প্রশাসনিক। বাহ্যিকভাবে রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনাটি ঘটে যখন চিকিৎসা কিংবা কোনও স্বাস্থ্যসেবা কর্মী রোগীর নথিপত্র অবহেলায় ফেলে রাখেন, জনপরিসরে রোগী ও রোগ নিয়ে আলোচনা করেন; রোগীর নথিপত্র ও অন্যান্য উপকরণ যথাযথভাবে বিনষ্ট করা হয় না; প্রবেশাধিকার সীমিত এমন এলাকায় কেউ যখন অনুমতি ছাড়াই ঢুকে পড়ে।
অন্যদিকে ডিজিটাল উপায়ে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে যখন হাসপাতালে রোগীর নথিপত্র ও ইলেক্ট্রনিক তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সুরক্ষা না থাকে।
পাসওয়ার্ডেও বেহাত ঘটে। রোগীর তথ্য উপাত্ত সংরক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোনের ব্যবহার করা হয়। সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই ইমেইলে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য আদান প্রদান করা হয়। কিংবা হাসপাতালে ম্যালওয়ার ও সাইবার হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফেলতির কারণেও রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়। যেমন: স্বাস্থ্যসেবাকর্মীর দরকারি প্রশিক্ষণ না দেওয়া; তথ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বণ্টন ব্যবস্থা সঠিক না হওয়া; দুর্বল অডিট প্রক্রিয়া; হাসপাতালে আসলেই কোনও গোপনীয়তার নীতি না থাকা; প্রয়োজনে কোনও তথ্য সঠিকভাবে প্রকাশ না করা।
অনেক সময় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে এই গোপনীয়তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। যেমন কখনও কখনও কোনও স্বাস্থ্যসেবাকর্মী খেয়ালের বশে কোনও রোগীর আচরণ বা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে হাসপাতালের রেস্তরাঁ কিংবা অন্য কোথাও সহকর্মীর সঙ্গে বলে ফেললেন। সেই কথা পাশ থেকে অন্য ব্যক্তি শুনে ফেললে রোগীর গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়। আবার কখনও কখনও রোগীর নাম, ঠিকানা উহ্য রেখে কোনও কোনও স্বাস্থ্য সেবাকর্মী তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তথ্য প্রকাশ করেন। এর ফলে রোগীর সঙ্গে সেই স্বাস্থ্যসেবা কর্মীর পেশাগত বিশ্বস্ততা লঙ্ঘিত হয়। আবার হাসপাতালের তথ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা হ্যাক হয়ে গেলে, হারিয়ে গেলে, চুরি হয়ে গেলে রোগীর তথ্যাবলি জনপরিসরে উন্মুক্ত হয়ে যায়। অনেক সময় হাসপাতালে সেবা প্রদানের সঙ্গে যুক্ত তৃতীয় পক্ষের কাছেও রোগীর তথ্য ফাঁস হয়ে যায়।
তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য ডাক্তার কিংবা হাসপাতালের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে। যেমন, কোনও রোগীর নিজের বা অন্যের ক্ষতি করার ঝুঁকি থাকলে; রোগীর প্রতি দুর্ব্যবহার কিংবা অবহেলার ঝুঁকি ও সন্দেহ থাকলে; আদালতের আদেশ কিংবা আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলে; জনস্বাস্থ্যে অবস্থার চিত্র সঠিকভাবে তুলে ধরার প্রয়োজন পড়লে; ইন্স্যুরেন্স প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে; রোগীর মেডিক্যাল জরুরি অবস্থা তৈরি হলে; রোগী প্রয়োজনীয় মতামত দিলে এবং রোগ সম্পর্কে বাধ্যতামূলক প্রতিবেদন দিতে হলে।
রোগীর গোপনীয়তা সুরক্ষার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব চিকিৎসকের ও চিকিৎসাসেবা কর্মীর। তারা সেই শপথ নিয়ে থাকেন। আর এসব ফাঁস হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অন্যতম কারণগুলো হলো স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা ও যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকা। রোগীর গোপনীয়তা স্বাস্থ্যসেবার একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি রোগী ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের মধ্যকার পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে।
চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যাদির গোপনীয়তা রক্ষা করা শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতার জন্যই নয়, বরং এটি একটি নৈতিক অঙ্গীকারও বটে, যা স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবীদের অবশ্যই পালন করা জরুরি। এই গোপনীয়তার নিশ্চয়তা বোধ করলে রোগীর সংবেদনশীল বিনিময়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। কেননা রোগী যদি বিশ্বাস করে যে ডাক্তার তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে তাহলে সে মন খুলে কথা বলবে। আর রোগীর মন খুলে কথা বলার এই বিষয়টি সঠিক রোগ নির্ণয়ের প্রশ্নে অত্যন্ত জরুরি। উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের প্রশ্নে এটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এই গোপনীয়তা নিশ্চিতের প্রশ্নে ডাক্তারের রয়েছে আইনি ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা। এছাড়া রোগীর সুরক্ষার প্রশ্নেও এই গোপনীয়তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হলে তিনি মারাত্মক মানসিক আঘাত পেতে পারেন, কোনোভাবে বৈষম্যের শিকার হতে পরেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে এবং চূড়ান্তরূপে রোগীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তা লঙ্ঘিত হতে পারে।
লেখক: সিনিয়র লেকচারার, মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগ, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)।
*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।