২৩ জুন তারিখটি তাৎপর্যপূর্ণ দুটি কারণে। এক নম্বর কারণ হলো ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন তারিখে পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজউদ্দৌলা একদল বেইমান-বিশ্বাসঘাতকের কারণে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হন। এই পরাজয় পুরো ভারতকে ইংরেজ শাসনের অধীনে নিয়ে যায় পরবর্তী ১৯০ বছরের জন্য। ভারত ইংরেজমুক্ত হলেও দ্বিজাতি-তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত হয় ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি দেশ। সে কারণে ২৩ জুন তারিখটি বাংলাদেশের জন্য, এমনকি ভারতের জন্যও একটি বিশেষ দিন। কিন্তু পাকিস্তানে বাঙালিরা শুরু থেকেই নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। ফলে তখন বাঙালিদের জন্য মুক্তির পথ তৈরি করার কোনও বিকল্প ছিল না। দুই নম্বর কারণ হলো– এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন তারিখটিতে জন্ম হয় আওয়ামী লীগের। আজ সেই ঐতিহাসিক গৌরবময় অভিযাত্রার ‘প্লাটিনাম জুবলি’।
পৃথিবীর বুকে আওয়ামী লীগ সেই বিরল রাজনৈতিক দলগুলোর একটি, যেটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে। যেমনটি বলা যায় ‘আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসে’র [১৯১২] ক্ষেত্রে। আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গরা দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে বর্ণবাদ থেকে মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা [১৯৭১] অর্জন করেছে, বিশ্বের মানচিত্রে উদিত হয়েছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পতাকা। তাই বাঙালি জাতির রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারক-বাহক হিসেবে গণমানুষের দল হিসেবে তিল তিল করে গড়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও অগ্রযাত্রার ইতিহাস আর আওয়ামী লীগের ইতিহাস একই। আজকে যে আধুনিক বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে, সেটাও এসেছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের কারণে।
পাকিস্তান নামক দেশের জন্ম হলেও পূর্ব বাংলায় প্রকৃতপক্ষে কোনও রাজনৈতিক দল ছিল না। এখানকার নবাব পরিবার থেকে শুরু করে বেশিরভাগ রাজনীতিবিদই ছিলেন মুসলিম লীগের; বাস্তবতা তেমনই ছিল। কিন্তু দেশভাগের পূর্বাপর ভাষা আন্দোলনের সময় থেকে, মাতৃভাষা ও আবহমান বাংলার সংস্কৃতি রক্ষার প্রত্যয়ে এক ষড়যন্ত্রমুখর সময়ের জাল ছিন্ন করে জন্ম নেয় আওয়ামী লীগ। সেসময় ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার সময় জেলে ছিলেন তৎকালীন প্রভাবশালী ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ আরও অনেকে।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার কে. এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশিমের নেতৃত্বাধীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একটি অংশের নেতাকর্মীদের কনভেনশনে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন এই দলের নামকরণ হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি, আতাউর রহমান খান, শওকত হোসেন ও আলী আহমদ খানকে সহ-সভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবুর রহমান (তখন কারাবন্দি), খোন্দকার মোশতাক আহমদ ও এ. কে রফিকুল হোসেনকে যুগ্ম-সম্পাদক, এবং ইয়ার মোহাম্মদ খানকে কোষাধ্যক্ষ করে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক দল ছিল। ১৯৫৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবরের তৃতীয় কাউন্সিল সভায় ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী হিসেবে দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেওয়া হয়। দলটি কল্যাণমূলক অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে। ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, যুবক ও মহিলাদের মধ্যে এই দলের অঙ্গসংগঠন রয়েছে।
পাকিস্তান আমলে ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলেও পাকিস্তানিদের প্রতারণা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ধরা পড়ে। ফলে ধর্মপ্রাণ বাঙালি জাতি ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। ধর্মের ফতোয়া দিয়েও তাই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলায় মাত্র ৯ আসন পেয়ে বিদায় হয় মুসলিম লীগ। ধর্মের নামে অধর্মের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখা এবং অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের জন্য আপামর বাঙালির মন ও ম্যান্ডেট জিতে নেয় আওয়ামী লীগ। পাকিস্তানি শাসনের সূচনালগ্ন থেকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাভাষাকে স্বীকৃতি, এক মানুষ এক ভোট, গণতন্ত্র, শাসনতন্ত্র প্রণয়ন, সংসদীয় সরকার পদ্ধতি, আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন এবং দুই প্রদেশের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ ইত্যাদি ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান দাবি।
শেখ মুজিবুর রহমানের গতিশীল নেতৃত্বকে কাজে লাগাতে তাকে যুগ্ম-সম্পাদক করা হলেও কিছু দিন পর থেকেই সাধারণ সম্পাদকের কাজটি তাকেই করতে হতো। অবশেষে ১৯৫৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। বঙ্গবন্ধু অক্লান্ত শ্রম এবং তেজস্বী নেতৃত্বের কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। যার ফল, ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের ঐতিহাসিক বিজয়। এরপরের ইতিহাস শুধুই আওয়ামী লীগ এবং গণমানুষের মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়ার। ১৯৬৬ সালে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে যে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয় আওয়ামী লীগের তরফ থেকে সেটাকেই মনে করা হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম একটি পদক্ষেপ। এরপর ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের ভূমিকা দলটিকে এই অঞ্চলের একক বৃহৎ রাজনৈতিক দলে পরিণত করে ফেলে আর শেখ মুজিবুর রহমান পরিণত হন দলের অবিসংবাদিত নেতায়। এর সঙ্গে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা যুক্ত হওয়ায় শেখ মুজিব আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং বলা হয় সেই জনপ্রিয়তাই সত্তর সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় এনে দেয়। ফলশ্রুতিতে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিলো, যার ধারাবাহিকতায় এখন স্বাধীন বাংলাদেশ।
অবশ্যম্ভাবীভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা পেলো আওয়ামী লীগ, সরকার প্রধান হলেন দলের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়; এমনকি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাতীয় চার নেতাকে জেলের মধ্যে হত্যা করে স্বাধীনতাবিরোধী উগ্রবাদীরা। এরপর দেশটাকে লুটপাট করে খেতে থাকে তারা। দীর্ঘদিনের জন্য সামরিক সরকারের শাসনে চলে যায় বাংলাদেশ এবং বিরাট ছন্দপতন নেমে আসে আওয়ামী লীগে। ১৯৮১ সালে শেখ মুজিবর রহমানের বেঁচে যাওয়া দুই মেয়ের বড় জন শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করার পর আওয়ামী লীগের এই ছন্দপতন দূর হয়।
পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়, যুগপৎ আন্দোলনে স্বৈরশাসকের পতন হয়, এবং ১৯৯০ সালের একটি সাধারণ নির্বাচনে দীর্ঘ সময় পর আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও পরাজিত হয়ে বিরোধী দলে পরিণত হয়। দীর্ঘ একুশ বছর রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থাকার পর আওয়ামী লীগ আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। এরপর আরেক দফায় ক্ষমতার বাইরে থাকার পর ২০০৯ সালে আবার নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারা বর্তমানে টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সরকারি কিছু আমলা ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতার কারণে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বারবার ক্ষুণ্ন হয়েছে। একই সঙ্গে দেশে দৃশ্যমান দুর্নীতি ও অর্থপাচার জননেত্রী শেখ হাসিনাও অস্বীকার করেন না।
এই লেখাটা শুরু করতে চেয়েছিলাম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দিয়ে এবং শেষ করতে চেয়েছিলাম ওবায়দুল কাদেরের কথা দিয়ে। প্রথম জন হলেন প্রয়াত ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, দ্বিতীয় জন বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সৈয়দ আশরাফ ২০১৯ সালে মারা যান ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নিজের শেষ বক্তব্য দিয়েছিলেন ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর। দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ওই বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি অনুভূতি।’ সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু আওয়ামী লীগকে কোনোদিনই দল হিসেবে ভাবিনি, আওয়ামী লীগকে ভেবেছি একটা অনুভূতি।’ তাঁর বক্তব্যে আবেগের প্রকাশ বেশি ছিল সন্দেহ নেই। কিন্তু এটাও সত্য বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষ ওই আবেগ দিয়েই আওয়ামী লীগ করে, আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে। তবে সব আওয়ামী লীগারের মধ্যে সেই ডেডিকেশন ও ভালোবাসা আছে কিনা- এ প্রশ্ন থেকেই যায়।
সৈয়দ আশরাফের সেই ‘অনুভূতি’ এখন কতটা লালন করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। ২০২০ সালের মার্চে রাজশাহীর মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আওয়ামী লীগে কর্মী কমে যাচ্ছে, নেতার সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের এত নেতার দরকার নাই। আমাদের দরকার সত্যিকারের সাচ্চা কর্মী।’
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করেছে। অর্থনৈতিকভাবে সামাজিক বৈষম্য রোধ এবং সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের সংবিধানের চার নীতির একটি সমাজতন্ত্র। এই সমাজতন্ত্র মানে সামাজিক সাম্য, বৈষম্য কমানো, অর্থনৈতিকভাবে প্রান্তিক মানুষের জন্য সুবিধা নিশ্চিত করা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার সময় থেকেই জনগণকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনাও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। জাতীয় মুক্তি অর্জনের সর্বশেষ ধাপগুলো অর্জনের জন্য দেশের মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য পরিকল্পনামাফিক দেশকে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে আওয়ামী লীগ। স্বৈরাচার-উগ্রবাদমুক্ত রাষ্ট্র কায়েম এবং গণতন্ত্র অর্জন আওয়ামী লীগের অন্যতম বড় অর্জন।
১৯৯৬-২০০১ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বাংলাদেশে যে উন্নয়নের সূচনা করেছিলেন তা চারদলীয় সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠী শুধু রুদ্ধই করেনি। তাদের কারণে আমরা ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকার দেখলাম। আমরা জাতির পিতার কন্যা ও গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে জেলে যেতে দেখলাম। বাংলাদেশের মানুষ এরপরই বুঝে গেছে উন্নয়ন যদি অব্যাহত রাখতে হয় তবে বারবার শেখ হাসিনাকে এ দেশের ক্ষমতায় আনার কোনও বিকল্প নেই। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনেক ফ্লাইওভার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল, ঢাকা-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ, ঢাকা-বেনাপোল রেল যোগাযোগ, ঢাকা-খুলনা নতুন লাইনে রেল যোগাযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর- এসব মেগা প্রকল্প করা সম্ভব হয়েছে সরকারের ধারাবাহিকতার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে ১০০টি সেতু উদ্বোধন হতে দেখেছে। এমন অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে এবং উন্নয়ন চলমান। এর পেছনে অবশ্যই সরকারের ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কারণ অনেক প্রকল্প এখন চলমান। সরকার কোনও কারণে বদলে গেলে সেগুলো স্থবির হয়ে যাবে।
শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতটা এগিয়েছে তা বাস্তবমুখী শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন ছিল সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতি। এখন শুধু সৃজনশীলতা দিয়েই হচ্ছে না। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হতে হলে আরও বাস্তব ও প্রয়োগ উপযোগী শিক্ষা কার্যক্রম দরকার। সরকারের নতুন শিক্ষানীতি সেটিই বাস্তবায়ন করতে বদ্ধপরিকর। নতুন শিক্ষা কার্যক্রমে একজন শিক্ষার্থী বাস্তবিক প্রয়োগিক জ্ঞান লাভ করছে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য খুবই দরকার। স্মার্ট নাগরিক সৃষ্টিতে এর কোনও বিকল্পও নেই।
আজ ২৩ জুন, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ঐতিহ্য সংগ্রাম ও স্বপ্নবোনার ৭৫ বছর। এই ৭৫ বছরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজনীতির ময়দানে অনেক হারিয়ে দেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। জিয়া-এরশাদ ছদ্ম গণতন্ত্রের নামে যে সেনাশাসন ও স্বৈরাচারী রাষ্ট্রের কায়েম করেছিল তার মূল উৎপাটন করেছে। ওয়ান ইলেভেনের নায়কদের হাত থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে। স্বাধীনতাবিরোধী, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করেছে। এ দেশ এখন স্বপ্ন দেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব একটি উন্নত বাংলাদেশের। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘প্লাটিনাম জুবলিতে’ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
লেখক: অধ্যাপক; সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি); পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল); সভাপতি, এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)। সহ-সভাপতি, আমরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন।