দেশে ধানের উৎপাদন ও চালের দাম নিয়ে সরকারের সন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক সফলতা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে আলুর দাম নিয়ে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘কেন বাজারে আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে’।
প্রতিমন্ত্রীর বিস্ময়ে আরও মাত্রা যোগ করেছেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি জানান, এ বছর আলুর উৎপাদন কম হওয়ায় মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে ও কোল্ডস্টোরেজে মজুতকৃত আলু দিয়ে আগামী ৪ মাস চাহিদা মেটানো যাবে। এ ক্ষেত্রে নতুন আলু উৎপাদনের আগ পর্যন্ত আলু আমদানির সিদ্ধান্ত বহাল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি সচিব।
ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও মজুত কার্যক্রম তদারকির বিষয়ে বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণালয় সভায়’ সরকারের মন্ত্রী, সচিবসহ দায়িত্বশীলদের আলাপে এসব প্রসঙ্গ উঠে আসে। গত ২৭ মে কৃষি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশ করা হয় ১২ জুন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বৈঠক প্রসঙ্গে ওই সভায় উল্লেখ করেন, আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজার স্থিতিশীল রাখা, ভোক্তারা যেন যৌক্তিক মূল্যে পণ্য পায় এবং পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি না হয়।
বৈঠকে কৃষি সচিব জানান, কৃষিপণ্য উৎপাদনে ধারাবাহিক সফলতা চলমান আছে। বেশির ভাগ পণ্যই দেশে পর্যাপ্ত উৎপাদন হচ্ছে। বাজারে গেলে চাল, শাকসবজি, ফলমূলের ব্যাপক সরবরাহ দেখা যায়।
কৃষি বা ফলমূলের সরবরাহ থাকলেও সরেজমিন বাজারের তথ্য বলছে বিপরীত কথা। ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে মসলার দাম, সবজি ও আলুর দাম। সমানতালে কাঁচাবাজারেও চলছে মূল্যবৃদ্ধির নৈরাজ্য।
ঈদ সামনে রেখে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৪০ টাকা বেড়ে আদার কেজি পৌঁছেছে ৩০০ টাকায়। শুক্রবার (১৪ জুন) মিরপুরের একাধিক কাঁচাবাজারের সরেজমিন তথ্য বলছে, দেশি পেঁয়াজ ও রসুনের উচ্চমূল্য অপরিবর্তিত। ক্রস জাতের পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৮৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচসহ বেশ কিছু সবজি এবং ডিমের দামও বেড়েছে।
সর্বশেষ শনিবার (১৫ জুন) কাওরান বাজারেই খুচরা বিক্রেতাদের আলু ৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৫০-২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে। দেশি পেঁয়াজ (পাবনা) বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
‘আলুর দাম ৬০ টাকা কেজি, যা অনেক বেশি’, গত ২৭ মে’র বৈঠকে বলেছিলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি উল্লেখ করেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উৎপাদনের তথ্যে গরমিল আছে।’
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জানান, আলু ও আম উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ সপ্তম।
চালের দামে সন্তুষ্ট সরকার
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও মজুত কার্যক্রম তদারকির বিষয়ে বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণাল সভায় চাল ও গমের মজুত নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা হয়। খাদ্য সচিব সভাকে অবহিত করেন, চাল ও গমের মজুত পর্যাপ্ত আছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ভালো হওয়ায় গত তিন মাসে চালের দাম কমেছে।
তবে, ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, ২০২১ সালেও দফায় দফায় চালের দাম বেড়েছে। ওই সময় নাজিরশাইল ৬৮ টাকায় বিক্রি হলেও দুই বছরে তা বেড়ে এখন অন্তত ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছরের মার্চেও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল কেজিপ্রতি ৬৪-৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
রবিবার (১৬ জুন) রাজধানীর মগবাজারের বিভিন্ন মুদি দোকানি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, এই নাজিরশাইল চালই প্যাকেজাত করে বিক্রি হচ্ছে অন্তত ৯০ টাকা কেজি।
আন্তমন্ত্রণালয় সভায় খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন এনডিসি জানান, ‘যদিও ৪টি পার্শ্ববর্তী দেশে (চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম) চালের উৎপাদন কমেছে ও দাম বেড়েছে। এ বছর বিদেশ থেকে এক কেজি চালও আমদানি করতে হয়নি।’
‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪’-এ দেখা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকারিভাবে ১১.০০ লাখ মেট্রিক টন (চাল ১.৫০ লাখ মেট্রিক টন ও গম ৯.৫০ লাখ মেট্রিক টন) খাদ্যশস্য আমদানির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে (ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত) প্রকৃত খাদ্যশস্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৭৬ লাখ মেট্রিক টন (চাল ০.০০ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ৩.৭৬ লাখ মেট্রিক টন)। বেসরকারি খাতে একই সময়ে আমদানির পরিমাণ ৩৩.৭৩ লাখ মেট্রিক টন (চাল ০.০০ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ৩৩.৭৩ লাখ মেট্রিক টন)। ফলে সার্বিকভাবে দেশে মোট খাদ্যশস্য আমদানির পরিমাণ ৩৭.৪৯ লাখ মেট্রিক টন (চাল ০.০০ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ৩৭.৪৯ লাখ মেট্রিক টন)।
দেশে ধান, ভুট্টা, আলু, সবজি ও ফলসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বলে জানান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও। তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদন ছিল ৩২৮.৯৬ লাখ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা প্রায় ৪২ শতাংশ বেড়ে ৪৬৭.০৩ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে।
আন্তমন্ত্রণালয় সভায় কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘বোরোতে উৎপাদন ভালো হয়েছে। চালের কোনও ঘাটতি নেই এবং চালের দাম স্থিতিশীল আছে।’
‘প্রতিবছর বাংলাদেশের গমের প্রয়োজন হয় ৬০.০০ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে ১০.০০ লাখ মেট্রিক টনের মতো আমরা উৎপাদন করি এবং অবশিষ্ট গম আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটাতে হয়’, বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, ‘বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্যের অবৈধ মজুতদার এবং অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধিকারী ও অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। অটো রাইস মিল ও করপোরেট ব্যবসায়ীদের রাইস মিলগুলোতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।
মজুত আলুতে চলবে আর ৪ মাস
আন্তমন্ত্রণালয় সভায় কৃষি সচিব বলেন, ‘এ বছর উৎপাদন কম হওয়ায় আলুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে সর্বোচ্চ আলু উৎপাদনকারী জেলা মুন্সিগঞ্জে অতি বৃষ্টির কারণে দুইবার মাটির নিচে রোপিত আলু বীজ নষ্ট হয়েছে। এছাড়া দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় অপরিণত আলু ক্ষেত থেকে তুলে কৃষক বিক্রি করেছে। ফলে সামগ্রিকভাবে আলুর উৎপাদন কম হয়েছে।’
সচিব উল্লেখ করেন, বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে ও কোল্ডস্টোরেজে মজুতকৃত আলু দিয়ে আগামী ৪ মাস চাহিদা মেটানো যাবে। নতুন আলু উৎপাদন হওয়ার আগ পর্যন্ত দাম বাড়লে এটি আমদানির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সচিব। তিনি মনে করেন, চাহিদা মেটাতে এ বছর অতিরিক্ত আলু আমদানির প্রয়োজন হতে পারে।
বৈঠক প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী সভায় উল্লেখ করেন, ‘আমরা এখানে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসেছি—যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে, ভোক্তারা যেন যৌক্তিক মূল্যে পণ্য পায়, পণ্যের সরবরাহ ঘাটতি না হয়।’
তিনি পেঁয়াজ ও আলু আমদানিতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সহনীয় রাখার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।’
কৃষিমন্ত্রী সভায় জানান, বোরোতে উৎপাদন ভালো হয়েছে। চালের কোনও ঘাটতি নেই এবং চালের দাম স্থিতিশীল আছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমদানি উন্মুক্ত রয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক সভায় আলু ও পেঁয়াজের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের সুপারিশ করার কথা উল্লেখ করেন। তিনি পণ্য দুটির দ্রুত আমদানি বাড়ানোর বিষয়েও মতামত প্রদান করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব আলু-পেঁয়াজের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এ পাঠানোর কথা জানান মহাপরিচালক।
গোয়েন্দা তথ্যে ‘বাজার ম্যানিপুলেশন’
আন্তমন্ত্রণালয় সভায় বাজার ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায়ীদের অসততা, মূল্য বৃদ্ধিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আলোচনাও হয়। বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও মজুতের বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে।
রবিবার (১৬ জুন) বাংলা ট্রিবিউনের সরেজমিন প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর মৌলভীবাজারে ফোনকলে পাল্টে যায় মসলার দাম। এলাচের কেজি ৩৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে মৌলভীবাজারে। চট্টগ্রাম থেকে আসা ফোন কলে মুহূর্তেই পাল্টে যায় মসলার দাম। শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ৩ হাজার ৩২০ টাকা কেজি দরে এলাচ বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিছুক্ষণ পর কোথা থেকে কল এলো। তারপর এলাচের কেজি হয়ে গেলো ৩৬০০ টাকা, জিরার দাম বেড়ে গেলো কেজিতে ৪০ টাকা, লবঙ্গ-দারুচিনিও কেজিতে বাড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
মৌলভীবাজারে এখন মানভেদে জিরার কেজি ৬৯০ থেকে ৯৪০ টাকা, এলাচ মানভেদে ৩ হাজার ৩৮০ থেকে ৩ হাজার ৮২০, দারুচিনি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, জয়ত্রী ২৮৪০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ৪২০ এবং গোলমরিচ ৭৫০ থেকে ৭৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কালো গোল মরিচ প্রায় ১ হাজার টাকা, দারুচিনি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, সাদা মরিচ ১ হাজার ২৮০ টাকা, আলুবোখারা ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রমজানে ঈদের সময় এসব মসলার দাম ৫০-২৪০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল। এলাচের দাম রমজানের তুলনায় এখন দ্বিগুণ বেড়েছে।
মসলার পরিস্থিতি খুচরা বাজারে আরও উত্তাপ নিয়ে বসে আছে। শনিবার বিভিন্ন এলাকার দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, খুচরা বাজারে ১০০ গ্রাম এলাচ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫০০ টাকায়। এতে কেজি দাঁড়ায় ৫ হাজার টাকা। ১০০ টাকায় হাতে গোনা ১৫-১৬টা এলাচ দেওয়া হয়। জিরা খুচরায় ১০০ গ্রাম ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
‘অনেক সময় বাজার ম্যানুপুলেশন হয়। পণ্যমূল্য বৃদ্ধিতে কৃষক ও ভোক্তারা ‘সবচেয়ে ভোগান্তির শিকার’ বলে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় জানান প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বৈঠকে দাবি করেন, গত রোজার মাসে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া গেছে। বাজারে কোনও পণ্যের ঘাটতি ছিল না। এবারের কোরবানি ঈদেও যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানির কোনও ঘাটতি না থাকে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছিল।
গত কয়েক মাস ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে হিমাগার থেকে ডিম উদ্ধার হচ্ছে। প্রচলিত আইনে হিমাগারে ডিম রাখা অবৈধ। বগুড়া, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জেলার হিমাগার থেকে অন্তত কোটিখানেক ডিম উদ্ধার করেছে ভোক্তা অধিদফতর। পাশাপাশি প্রতিদিনই বাজারে বাড়ছে ডিমের দাম। মগবাজার এলাকার একাধিক ডিম ব্যবসায়ী জানান, ডিমের দাম আরও বাড়বে।
‘মুরগির খাবারের দাম বাড়ায় ডিমের দাম বেড়েছে’ বলে মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ তথ্য জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে বেশ কিছু ডিম পাড়া মুরগি মারা গেছে, ফলে ডিমের উৎপাদনও কমেছে।’ তিনি জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ডিম উৎপাদনে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মিটিং করে ডিমের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হিমাগারে ডিম মজুত কেন, তা খতিয়ে দেখার প্রশ্নও ওঠে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে। তখন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী তা খতিয়ে দেখার কথা বলেন।
এ বিষয়ে সভায় কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ বলেন, ‘এই মুহূর্তে ডিমের দাম কিছুটা বেশি। হিমাগারে ডিম মজুত রাখার খবর আমরা পাচ্ছি। এ বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। আমাদের সচিবরা সবসময় কোনও না কোনও ডিসিকে ফোন করছেন, খোঁজ-খবর রাখছেন। আমরা কেউ বসে নেই।’
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা চার মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় চান—সরকার পরিচালনায় যাতে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে তিনি আমাদের চার মন্ত্রণালয়কে একসঙ্গে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আবার মিটিংয়ে বসবো, প্রতিনিয়ত প্রতিটি পণ্যের দাম যাচাই করবো এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’