অর্থনীতির আকাশে জমে থাকা অনিশ্চয়তার কালো মেঘ কাটতে শুরু করেছে। দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপের পর মিলছে স্বস্তির ইঙ্গিত। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে বেশ খানিকটা আশার আলো উঁকি দিয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, ২০২৫ সালের মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে। অর্থাৎ সাত মাসের ব্যবধানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখায় সরকারের ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের প্রশংসা করেছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে বিগত বছরগুলোর মতো রমজান মাসে এবার জিনিসপত্রের দাম নতুন করে বাড়তে দেখা যায়নি। এ কারণে মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর নেওয়া সমন্বিত অর্থনৈতিক পদক্ষেপ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর মুদ্রানীতির ফলে ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে, যা গত ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে, তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার কারণে সার্বিক পরিস্থিতিকে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি এসেছে একাধিক সমন্বিত পদক্ষেপ ও কার্যকর নীতিমালার ফলে। সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ, অর্থনৈতিক সংস্কার ও আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতির ইতিবাচক প্রভাব মিলিয়ে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বর্তমানে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি কত
২০২৪ সালের আগস্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনে কিছু কাঠামোগত রদবদল আনা হয় এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। এক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে। অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে নিয়োগ দিয়ে একটি সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, সরকার পরিবর্তনের মাস আগস্টে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশে নামে। পরের মাস সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। তবে তার পরের মাস অক্টোবরে তা ফের দুই অংকের ঘরে ফিরে যায়। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ১০ দশমিক ৮৭ ও ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব নেওয়ার পরই সুদের হার বাড়িয়ে মুদ্রা সরবরাহ সীমিত করার চেষ্টা করা হয়। তবে বাজারে এর কার্যকর প্রভাব পড়ে খুব ধীরগতিতে। ডিসেম্বরে এসে কিছুটা স্বস্তির ইঙ্গিত মেলে। সার্বিক মূল্যস্ফীতি ওই মাসে সামান্য কমে এলেও খাদ্য খাতে চাপ ছিল তীব্র। ডিসেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত খাতেও কিছুটা স্বস্তি এসেছে—ডিসেম্বরে এ খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ, নভেম্বরে যা ছিল ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মার্চে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। সরকারিভাবে এই হার প্রকাশ করা হলেও বিশ্লেষক ও গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, প্রকৃত মূল্যস্ফীতির হার আরও বেশি হতে পারে।
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে খাদ্যবহির্ভূত খাতের ব্যয়। মার্চে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। বিপরীতে, খাদ্যপণ্যে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে— এই খাতে মূল্যস্ফীতি ফেব্রুয়ারির ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ থেকে মার্চে নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে।
খাদ্যপণ্যে স্বস্তি
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছরের শুরুতে শীতকালীন ফসল ও সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমে আসে, যা সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমাতে সহায়ক হয়েছে। জানুয়ারিতে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে কমে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে এবং মার্চে আরও কমে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে।
অপরদিকে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। জানুয়ারিতে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারিতে বেড়ে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং মার্চে আরও বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশে পৌঁছায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবহন, বাড়িভাড়া ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়বৃদ্ধি এই খাতে মূল্যস্ফীতির হারকে ঊর্ধ্বমুখী রেখেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, ‘আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি এবং ইতোমধ্যে তা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে।’ সম্প্রতি ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রশাসনের ভেতরকার সংস্কৃতি বদলের জন্যও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থায় অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে এখনও সক্রিয় রয়েছে সিন্ডিকেট চক্র। সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে মুক্তি পাওয়াই এখন সরকারের অন্যতম অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্য।’
যেসব কারণে মূল্যস্ফীতি কমেছে
শীতকালীন পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি ও দাম কমা: শাকসবজি, আলু, পেঁয়াজ, ডিমসহ কিছু নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে মূল্য কমেছে, ফলে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি আসে।
আমদানি শুল্ক ও কর হ্রাস: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক ও কর কমিয়েছে, যার ফলে আমদানিকৃত পণ্যের বাজারমূল্য কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
নীতিসুদ বৃদ্ধি ও মুদ্রানীতিতে কড়াকড়ি: বাংলাদেশ ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে নীতিসুদ (পলিসি রেট) বাড়িয়েছে এবং সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। ফলে বাজারে অতিরিক্ত টাকার প্রবাহ কমে যায়, চাহিদাও কিছুটা নিয়ন্ত্রিত থাকে।
টাকার মান স্থিতিশীল রাখা: ডলারের বিপরীতে টাকার মান স্থিতিশীল রাখায় আমদানি ব্যয় বেড়ে যায়নি। আগে যেখানে ডলারের দাম ছিল ১৩২ টাকা, বর্তমানে তা কমে এসেছে ১২২ টাকায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের আর্থিক কড়াকড়ি: ২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকেই তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ বন্ধ করে এবং পূর্বের বিপুল ঋণের একটি বড় অংশ পরিশোধ করে। বাজার থেকে ছাপানো টাকা প্রত্যাহার করায় মূল্যস্ফীতির চাপ হ্রাস পায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
বাজার তদারকি ও প্রশাসনিক নজরদারি: বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআরের ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে পণ্য সরবরাহ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়। রমজান মাসে পূর্বপ্রস্তুতি, শুল্কছাড় ও আমদানিতে গতি এনে বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যায়ন
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে ২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়, শীতকালীন কৃষিপণ্যের ভালো উৎপাদন, কঠোর মুদ্রানীতি, ডলারের স্থিতিশীলতা এবং ছাপানো টাকার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গতি ধরে রাখতে হলে বাজার ব্যবস্থাপনা, নীতিমালা বাস্তবায়ন ও আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় অব্যাহত রাখতে হবে। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমলেও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর প্রভাব এখনও রয়েছে, যা বিবেচনায় রেখে সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচি আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
আসন্ন বাজেটেও অগ্রাধিকার পাচ্ছে মূল্যস্ফীতি
মূল্যস্ফীতির এই চাপ মোকাবিলায় সরকার আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পরিকল্পনায় নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে। যদিও প্রাথমিকভাবে এই হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা ছিল, তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সরকার আরও আশাবাদী।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে।’ তিনি জানান, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় রাখতে এমন নীতিমালা গ্রহণ করা হচ্ছে, যা সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও বাজার স্থিতিশীলতার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়ক হবে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে দৃশ্যমান উন্নতি, কিন্তু টেকসই প্রশ্নে শঙ্কা
গত সাত মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তবে এই সাত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে মাত্র ২ দশমিক ৩১ শতাংশ, যার মূল কারণ—খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির গতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বাসাভাড়া, শিক্ষা, চিকিৎসা, পরিবহন ও গৃহস্থালি পণ্যসহ অনেক খাতে ব্যয় এখনও চাপে রেখেছে ভোক্তাদের।
এই বৈপরীত্যে প্রশ্ন উঠছে—সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক কৌশল কি দীর্ঘমেয়াদে টিকবে? বর্তমানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার আমদানি শুল্ক হ্রাস, টিসিবি’র মাধ্যমে নিত্যপণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি এবং ব্যাংক সুদের হার বাড়ানোর মতো কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কৌশল মূলত স্বল্পমেয়াদে তাৎক্ষণিক স্বস্তি দিতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে টেকসই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। যেমন- কৃষি ও উৎপাদন খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ সরবরাহ চেইনের আধুনিকীকরণ এবং জ্বালানি ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা।
মূল্যস্ফীতি কমার পরিসংখ্যান কিছুটা আশাব্যঞ্জক হলেও এখনই স্বস্তির কথা বলার সময় আসেনি বলে মনে করছেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। তার মতে, এখনও খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ৯ শতাংশে অবস্থান করছে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত উচ্চমাত্রার।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি থাকা উচিত দুই-তিন শতাংশের মধ্যে। সেখান থেকে এখনও অনেক দূরে আমরা।’
ড. জাহিদ হোসেন জানান, মৌসুমী সরবরাহ, বিশেষ করে শীতকালীন সবজির প্রাচুর্যের কারণে রমজান মাসে কিছুটা মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মৌসুম চলে গেলেও যদি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা না যায়, তাহলে মূল্যস্ফীতি ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠবে। এখন থেকেই আমদানি ও ডলারের সরবরাহ বিষয়ে নজর দিতে হবে।’
তার মতে, বাজারে পণ্যের সরবরাহ সচল রাখা, আমদানিকৃত পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং শুল্ক নীতি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শুল্ক ছাড়ের সুবিধা যাতে প্রকৃত অর্থে ভোক্তারা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যেন এই সুবিধা নিজেরাই ভোগ না করেন, সেদিকে কড়া নজরদারি প্রয়োজন।’